নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদ (এনসিসি) গঠনের ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামী একমত এবং তাদের মতে বিএনপি ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই এ বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।
জামায়াত নেতারা বলছেন, সব বিষয়ে ঐকমত্য শতভাগ সম্ভব নয়। কারণ ৩০টা দল আছে। সুতরাং ঐকমত্যের বাইরের বিষয়গুলো গণভোটে দেওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছে দলটি।
বুধবার (১৮ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠক শেষে একথা বলেন তিনি।
দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা এনসিসিসহ দুটি বিষয়ে কথা বলেছি। ঐকমত্যের অন্যান্য মডিউল, স্ট্রাকচার, ফাংশনাল অথরিটির বিষয়ে আলোচনা হবে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার)।
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আমাদের এখানে নির্বাচিত পার্লামেন্ট রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে থাকে। ঐকমত্য কমিশন রেফার করেছে যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটি ইলেক্ট্রোরাল কলেজ পদ্ধতিতে হবে। যেখানে তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ মেম্বর পর্যন্ত ৭০ হাজার ইলেক্ট্রোরাল মেম্বর হবেন। তাদের মাধ্যমে সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
এখানে আমাদের মত হচ্ছে, যে সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদেরই মনোনীত লোক নির্বাচিত হয়। সুতরাং এখানে ৭০ হাজার বা ৭০ লাখের কোনো ব্যবধান বিষয় থাকে না। এখানে আমরা দুটো কথা বলছি, প্রথমত, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মেম্বররা নির্বাচিত হবেন। তাদের নিয়ে যে কনস্টিটিয়েন্সি তৈরি হবে, সেটির ব্যাপারে আমরা সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে। তবে সেটা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর পর্যন্ত হবে নাকি ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পর্যন্ত কনসাইজ করা হবে সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
আমরা জেনেছি এনসিসির ব্যাপারে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। তবে বিএনপি বিরোধিতা করেছে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের বিষয়ের জবাবে তাহের বলেন, আমি তো বলিনি সবাই একমত হয়েছে। আমি বলেছি বেশি সংখ্যক দল একমত। আলী রীয়াজ সাহেব বলেছেন, তিন-চতুথাংশ একমত হয়েছে। সেখানে কম সংখ্যক দলে বিএনপিও আছে। আমরা চেষ্টা করছি। আরও ঐকমত্য কীভাবে আনা যায় সেজন্য আমরা লম্বা করে কথা বলেছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, ঐকমত্য বলতে যদি শতভাগ চাওয়া হয় তাহলে সেটা অসম্ভব। কারণ ৩০টা দল আছে। সুতরাং ঐকমত্যের বিষয়েও কনসাইজ কনসেপ্ট তৈরি করতে হবে। যেখানে যেখানে মতবিরোধ তৈরি হবে সেসব বিষয় গণভোটে দিতে বলেছি আমরা।
এনসিসির মতো যেসব বিষয়ে কোনো কোনো দল একমত হয় না, হয়নি। সেই দল যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে এই জিনিস টিকবে? জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির তাহের বলেন, আমরা তো সবাই কমিটমেন্ট দিচ্ছি। জুলাই চার্টার হবে সেখানে আমরা স্বাক্ষর করবো। আমরাই ক্ষমতায় যাই আর অন্য দলই ক্ষমতায় যাক না কেন, আমরা কমিটমেন্ট রক্ষা করব। আমি মনে করি সব দলকেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা উচিত।
গতকাল প্রথম দিনের আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামী উপস্থিত না হলেও আজকের আলোচনায় অংশ নেয় দলটি। আজকের আলোচনায় তাহের ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।