তাই বলে রিয়াল হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? অবশ্যই নয়। এমবাপ্পেকে নিয়ে পিএসজি যেমন তাঁদের তেজ দেখিয়েছে, পাল্টা তেজ রিয়ালও দেখাল এবার— এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে দলে টেনে। ফরাসি এই মিডফিল্ডারের দিকে রিয়াল-পিএসজি দুই ক্লাবেরই নজর বহুদিন ধরে। বিশেষ করে রিয়ালের।
গত মৌসুম থেকে কামাভিঙ্গাকে চোখে চোখে রাখা রিয়াল এই মিডফিল্ডারটিকে দলে টানতে পারছিল না করোনা ও করোনা-পরবর্তী আর্থিক সংকটের কারণে। ওদিকে মেসি-রামোসদের দলে ভেড়ানোর পর দলের মাঝমাঠকে আরেকটু শক্তিশালী করার জন্য স্বদেশি কামাভিঙ্গার দিকে নজর পড়েছিল পিএসজির। তিন কোটি ইউরোর বিনিময়ে কামাভিঙ্গা পিএসজিতেই যাবেন, এমনটা মনে হচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই।
কিন্তু এমবাপ্পেকে না পেয়ে মরিয়া রিয়াল সেটা হতে দিল কোথায়? নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় এমবাপ্পেকে এত কিছু করার পরেও পিএসজি যেমন রিয়ালে পাঠাতে রাজি হলো না, পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে এবার পিএসজির পছন্দের খেলোয়াড়কে দলে টানল রিয়াল। দলবদল বিষয়ক মোটামুটি সব নির্ভরযোগ্য সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছেন, প্রায় তিন কোটি দশ লাখ ইউরোর বিনিময়ে কামাভিঙ্গাকে দলে টানছে রিয়াল মাদ্রিদ। অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার।
১৮ বছর বয়সী কামাভিঙ্গার চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী বছর, এমবাপ্পের মতোই। রেনেঁর সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করলে আগামী বছর ফ্রি-তেই ক্লাব বদল করতে পারবেন। পিএসজি নাহয় ‘বড়লোক’ ক্লাব, এমবাপ্পেকে আগামী বছর ফ্রি তে ছেড়ে দিতেও গায়ে লাগবে না তাঁদের, তাই বলে রেনেঁর অবস্থা তো অমন নয়। তাই এক বছর আগেও রিয়ালের কাছে কামাভিঙ্গার জন্য আট কোটি ইউরো দর হাঁকানো দলটা এবার সুর নরম করেছে। দাম কমিয়ে কামাভিঙ্গার জন্য এখন তিন কোটি ইউরো চাইছে তাঁরা।
দাম কমানোর পরেও রিয়াল মাদ্রিদ কামাভিঙ্গার প্রতি অতটা আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। ওদিকে নিজ দেশের আগামী দিনের তারকাকে কেনার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল পিএসজি। আন্দের এরেরা, ইদ্রিসা গেয়ে, দানিলো পেরেইরার মতো মিডফিল্ডাররা আজ হোক বা কাল, পিএসজি ছাড়বেনই। তাঁদের জায়গায় এখন থেকেই কামাভিঙ্গাকে দলে চাইছিল পিএসজি।
কিন্তু এমবাপ্পের সঙ্গে কামাভিঙ্গার ভাগ্য যে এভাবে জড়িয়ে আছে, কে জানত! এত দিন এমবাপ্পের জন্য টাকার থলি নিয়ে বসে থাকা রিয়াল বুঝেছে, পিএসজিকে এই লোভ দেখানো নিরর্থক। তাই বেছে বেছে এমন একজন খেলোয়াড়কে দলে টানছে, যাকে কিনলে পিএসজিকে বিরক্ত করা যাবে ভালোভাবে। ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, এর মধ্যেই প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে কামাভিঙ্গার। ২০২৬ সালে পর্যন্ত রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে তাঁর।
গত কয়েক মৌসুম ধরে রিয়ালের মূল রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার কাসেমিরোর কোনো বিকল্প নেই দলে। একজন ছিলেন, কিন্তু সেই মার্কোস ইয়োরেন্তেকে গত মৌসুমে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে আতলেতিকোর কাছে। কাসেমিরোর ফিটনেস নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই, কিন্তু তিনি চোটে পড়লে কোচ আনচেলত্তির মাথায় চিন্তার ভাঁজ পড়তেই পারে। কামাভিঙ্গা আসার ফলে সে চিন্তাটা এখন অন্তত হবে না আনচেলত্তির।
বিএসডি/এএ