নিজস্ব প্রতিবেদক
হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ ধ্বংস করে এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত প্রকৃতি বিধ্বংসী ও জনবিরোধী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সংযোগ সড়ক বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) নাগরিক সংলাপের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান জানিয়েছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলামোটরের প্ল্যানার্স টাওয়ারে এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হবে।
তিনি আরও জানান, নাগরিক সংলাপটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি), এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইআরডিএ), ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, কলাবাগান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, গ্লোবাল থিংকারস সোসাইটি, জলপুতুল পাপেটস, টিম ইনক্লুশন বাংলাদেশ, তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলন, নারীপক্ষ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এনডিএফ), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), পান্থকুঞ্জ প্রভাতি সংঘ, প্রাকৃতিক কৃষি, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটি, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি), বাংলাদেশ ইকোলজিকাল নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম, বেঙ্গল ডিসকভার, ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভ (বিপিআই), রিভার বাংলা, সেন্টার ফর ল’ অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স, স্পৃহার যৌথ উদ্যোগে সংগঠন নাগরিক সংলাপে অংশ নেবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগের কারণে হাতিরঝিল জলাধার ও পান্থকুঞ্জ পার্কের পরিবেশ ইতোমধ্যেই ধ্বংসের পাশাপাশি কাঁঠালবাগান-কাটাবন-নীলক্ষেত-পলাশীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সামগ্রিক পরিবেশ ও পরিবহন ব্যবস্থা সীমাহীন সংকটে পড়বে। ফলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
মেগাপ্রজেক্টের বিনিয়োগ ফেরত আনা ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এই সংযোগ সড়কটি প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এই এলাকায় বিদ্যমান অতিব্যস্ত রাস্তাসমূহের উপযোগিতা নষ্ট করবে। একইসঙ্গে এই এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প উঠানামার কারণে বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক জ্যাম আরও অনেক বেড়ে যাবে।
বিগত সরকারের সময়ে পরিবেশগত, পরিকল্পনাগত প্রভাব বিশ্লেষণ এবং জনগণের মতামত ছাড়াই যে সব মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর অন্যতম হল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এই প্রকল্পের প্রথম দিকের প্রস্তাবনায় ও এই সংযোগ সড়ক ছিল না। প্রস্তাবিত শতাধিক পিলারসমূহ এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জলাধারের পানিপ্রবাহ ও সার্বিক উপযোগিতা ধ্বংস করবে। সংযোগ সড়ক প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই পার্ক-উদ্যান-জলাধার সংরক্ষণ আইন, পরিবেশ সংক্রান্ত আইন ও বিভিন্ন পরিকল্পনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে।