নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বর্তমানে স্কুল-কলেজে সশরীরে আংশিক পাঠদান কার্যক্রম চলছে। তবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পাঠদান শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভার্চুয়াল যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য স্কুল-কলেজে আপাতত ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না। তবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পাঠদান শুরু করা হবে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি এড়াতে আপাতত নতুন কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল হওয়ার পর কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা মূল্যায়ন করতে বৃহস্পতিবার দুই মন্ত্রণালয়ের একটি রিভিও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপত্বিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ উভয় মন্ত্রালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দেড় বছর পর করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠদান শুরু করা হয়। আর এ পাঠদান শুরুর পরে এ পর্যন্ত কী কী ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সংশ্লিষ্টরা তুলে ধরেন। মানিকগঞ্জ, বগুড়া, নারায়গঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কোনো কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে যাওয়ার পর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে মানিকগঞ্জ জেলার এক ছাত্রী মারা গেছেন। অন্যদের তেমন কোনো সমস্যা না হলেও কিছু কিছু স্থানে আতংক বিরাজ করছে। এ কারণে মফস্বল পর্যায়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম। তবে ঢাকা মহানগরের বিদ্যালয়গুলোতে সে তুলনায় কিছুটা বেশি থাকলেও চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীর উপস্থিতি সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, বর্তমানে যেভাবে স্কুল-কলেজে পাঠদান চলছে সেভাবেই চালিয়ে নেওয়া হবে। নভেম্বর এসএসসি-সমমান ও ডিসেম্বরে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে কারণে নতুন করে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ ও ঝুঁকি তৈরি করা হবে না। এ দুই পরীক্ষা শেষ হলে আগামী বছরের শুরু থেকে ক্লাস পাঠদান স্বাভাবিক করা হবে। তবে সেক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা আয়োজনে সবধরনের প্রস্তুতি থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে আয়োজন করা কঠিক হয়ে পড়েছে। এ কারণে এ বছরের পরীক্ষা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব স্তরে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। ক্লাস পরীক্ষা মূল্যায়ন করে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি। আমরা ক্লাস সংখ্যা বাড়াতে চাই। যেহেতু কিছু কিছু স্থানে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে, আমরা তা দ্রুত সময়ে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামী বছরের শুরু থেকে ক্লাস সংখ্যা বাড়ানো হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুর আলম জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হয়েছে, তার সমাধান কী করা হয়েছে এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত ১২ অক্টোবর পাঠদান শুরুর পর থেকে সব বিষয় রিভিউ করা হয়েছে। তবে কেন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএসডি / আইকে