নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচিত সাবেক ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর) ও তার পরিবারের ব্যক্তিগত গোপন ভোল্ট আগামি ২৬ জানুয়ারি রোববার খোলা হবে। এ সময় সেখানে পাওয়া জিনিসপত্র জব্দ করা হবে। আদালত থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় তার লকার রয়েছে। এটি খোলার সময় একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ঢাকা জেলা ম্যাজিষ্টেটের কাছে গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন দুদক পরিচালক কাজী মোহাম্মদ সায়েমুজ্জামান।
গত ১৯ জানুয়ারি এস কে সুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, বীমার নথি, তিনটি ফ্ল্যাটের দলিল, চেকবই, পাসপোর্ট ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে দুদক। ওই সময় তার ভোল্টের তথ্য পায় দুদক টিম।
গত ১৪ জানুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিচালক নাজমুল হোসাইনের নেতৃত্বে একটি দল এস কে সুরকে গ্রেপ্তার করে।
এরআগে সম্পদের বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। ফিলিপাইনের একটি পত্রিকায় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সে সময়ে তৎকালীন গভর্নরের পদত্যাগ ও দুই ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন আরও দুজন ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। তারা হলেন আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান ও এস কে সুর চৌধুরী।
২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় এস কে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। গত বছরের আগস্টে এই পরিবারের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।
আলোচিত পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমনে নিয়োজিত সংস্থাটি। ওই বছরের ২৯ মার্চে তাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এসকে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান।