নিজস্ব প্রতিবেদক
বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরানোর অভিযোগে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা এনামুল হক এনামকে সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ায় চট্টগ্রামে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তারা এনামকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর, দেশ ধ্বংসকারী বিতর্কিত এনামুল হক এনাম আওয়ামী লীগ আমলে একজন চাল ব্যবসায়ী ছিলেন। তার কারণে বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এনাম হাসিনার পতনের পর এস আলমের গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কাণ্ডে জড়িত ছিলেন। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন এবং মামলার ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
তারা বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপি পরিচয়কে পুঁজি করে তিনি নিজে ও তার অনুসারীরা নানান অপকর্ম করছেন। এনামের অনুসারী পটিয়া পৌরসভা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুন স্বর্ণ ডাকাতি করে বহিষ্কৃত হয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এস আলম গ্রুপের জমি ও সম্পদ না কেনার পরামর্শ দেন। এর পরদিন ২৯ আগস্ট দিবাগত রাতে নগরের একটি ওয়্যারহাউস থেকে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম ও সদস্য মামুন মিয়াসহ একাধিক শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন মডেলের ১৪টি দামি গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এতে নড়েচড়ে বসে বিএনপির হাইকমান্ড। ৩১ আগস্ট এস আলম-সংশ্লিষ্ট নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। যথোপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারায় ১ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে আবু সুফিয়ান, এনামুল হক এনাম ও এসএম মামুনের প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। সবশেষ গত ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা তিনটি চিঠিতে ওই তিন নেতার স্থগিত হওয়া প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনটি চিঠিতেই সদস্যপদ ফিরে পাওয়া নেতাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিগুলোতে এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে তাদেরকে দলীয় গঠনতন্ত্রের ৫(গ) ধারা মোতাবেক প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছিল।