নিজস্ব প্রতিবেদক,
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, কারখানায় মানুষ কাজ করতে যায় জীবন বাঁচানোর জন্য, জীবিকা অর্জনের জন্য। সেখানে কাজ করতে গিয়ে যদি মানুষকে অকালে জীবন দিতে হয়- তাহলে তো সেটা কারখানা না, ওটা একটা মৃত্যুকূপ। বিএনপির পক্ষ থেকে কল-কারখানার দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে ‘জাতীয় মানদন্ড আইন’ প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কোম্পানির ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে হতাহত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানান বিএনপির এই নেতা।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একটা ঘটনা ঘটবে, আমরা কয়েক দিন হৈ চৈ করব তারপর সবাই আবার চুপ করে যাবো। সেটা না, এটার একটা স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা প্রস্তাব করেছি যে, একটা জাতীয় মানদন্ড আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার যে, এ ধরনের দুর্ঘটনায় শ্রমিকরা কী ক্ষতিপুরণ পাবে, হতাহতদের পরিবারগুলো কী ক্ষতিপুরণ পাবে, মালিকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা হবে এবং যারা এটার পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা হবে- এসব কিছুই সেটার মধ্যে থাকা দরকার। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
দলের এই নীতি-নির্ধারক বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও কনভেনশন-১২১, তার প্রাসঙ্গিক রিকমেন্ডেশন- ১৯৫৮ সালের মারাত্মক দুর্ঘটনা আইন এবং রানা প্লাজার (সাভার) দৃষ্টান্ত অনুযায়ী এই জাতীয় মানদন্ড প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এ কারখানার শ্রমিকেরা গত ২ মাস ধরে বেতন ও ওভারটাইম ভাতা না পাওয়ায় বিক্ষোভ করেছে এবং পুলিশের মধ্যস্থতায় গত ৫ তারিখ আংশিক পাওনা পরিশোধের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এ অবস্থায় শ্রমিকেরা অকালে নিহত হলেন এবং তাদের স্বজনেরা খালি হাতে ফিরে গেছেন। এমন অমানবিক ঘটনা নিন্দনীয় এবং বিচারযোগ্য অপরাধ। তিনি বলেন, ১১ বছর ৪ মাস বয়সের হাসনাইন, ১২ বছর বয়সের শান্তা, ১৪ বছর বয়সের মুন্না, ১৫ বছর বয়সের শাহানা ও নাজমুল, ১৬ বছর বয়সের ফয়সাল, ১৭ বছর বয়সের ইউসুফ ও আল আমীনের মতো শিশু-কিশোরসহ ১৬ জন নারী ও ২৩ জন পুরুষ শ্রমিকের অগ্নিদগ্ধ হয়ে এমন মর্মান্তিক ও অকাল মৃত্যুতে এবং ১২ বছরের রুমা ও ১৫ বছরের নদিয়ার মতো অসংখ্য আহতদের শোকার্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত¦নার দেয়ার ভাষা আমাদের জানা নেই।
তিনি বলেন, অগ্নিকান্ডে যারা মারা গেছেন- তাদের আত্মীয়স্বজনরা খালি হাতে ফিরে গেছেন। মালিকপক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, নিহতদের কার্ড দেন বা পরিচিতি পত্র দেন। কিন্তু নিহতদের স্বজনরা কোথায় পাবে সেই কার্ড। যারা মারা গেছে তারা তো কার্ডসহ জ্বলে-পুড়ে পরপারে চলে গেছে। এই অজুহাতে যদি আপনি বকেয়া পরিশোধ না করেন তার মানে আপনি পেমেন্ট করতে চাচ্ছেন না।
বিএসডি/ মাজিদ