নিজস্ব প্রতিবেদক
ভাগ্য পরিবর্তনে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিলেন মো. ফখরুল ইসলাম। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে লড়েছেন পুরোটা সময়। হঠাৎ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে কর্মস্থলে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। অবশেষে কফিনবন্দী হয়ে শেষবারের মতো দেশে ফেরা। অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিলেন সবাই।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের দারুল কুরআন মডেল মাদরাসা প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ফখরুলের মরদেহ। এ সময় একনজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনেরা।
মো. ফখরুল ইসলাম সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ইসলাম পাটওয়ারী বাড়ির মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৩ জুন মদিনা শহরের জুমার নামাজ শেষে কর্মস্থলে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন ফখরুল ইসলাম। এরপর সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে তার মরদেহ নিজ গ্রামে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। একনজর মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেন।
প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফখরুল ইসলামের ব্যবহার অনেক ভালো ছিল। দেখা হলেই তিনি হাসিমুখে কথা বলতেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার জানাজায় অংশগ্রহণ করার জন্য সেনবাগ উপজেলাসহ আশপাশের জেলা থেকেও মানুষজন এসেছে।
জানাজায় অংশ নেওয়া নোয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহমদ বলেন, ফখরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সৌদিতে কর্মরত ছিলেন। নিজের পরিবার ও সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য দেশ ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন। মদিনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে তিনি ছিলেন এক সুপরিচিত ও আপনজনের মতো মানুষ। বিশেষ করে নিজ এলাকার নতুন আগত প্রবাসীদের তিনি আগলে রাখতেন, সহানুভূতির ছায়াতলায়। মেহমানদার, উদার ও নিঃস্বার্থ মনোভাবের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। হিসাব রেখে কিছু রেখে যাননি, রেখে গেছেন ভালোবাসা ও সম্মান। তার মৃত্যুতে মদিনাসহ সৌদিপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন সোহেল গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সৌদি আরব গিয়ে ফখরুল কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন। এই ফেরা জীবনের শেষ ফেরা হবে তা কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি। এমন আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এক নজর মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেন। জানাজা শেষে তাকে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিয়েছে সবাই।