নিজস্ব প্রতিবেদক
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কমেছে মাছের দাম, তবে মুরগি-গরুর মাংসসহ অন্যান্য সবধরনের মাংসের দাম অপরিবর্তিতই রয়ে গেছে। এই অবস্থায় সবজির বাজারে ক্রেতাদের কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও মাছ-মাংসে কিছুটা স্বস্তি মিলছে বলে জানিয়েছেন কম আয়ের মানুষজন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী বাড্ডা-রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এদিকে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য পণ্যের তুলনায় মাছের বাজারেও কিছুটা স্বস্তি মিলছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহেও ছিল ৭০০ টাকা পর্যন্ত। শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এছাড়া পাঙাস ১৭০-১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কার্প মাছ ২৬০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ টাকা, মলা মাছ ২৮০, কই ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে পাবদা মাছের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে যেখানে পাবদা মাছ ছিল ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা, আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নিম্ন আয়সহ সাধারণ ক্রেতাদের মাংসের চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ব্রয়লার মুরগি। তবে মাঝেমধ্যেই হুটহাট করে দাম বেড়ে যায়, তখন আবার বিক্রিও কিছুটা কমে যায়। তবে নদী ও সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কমেছে।
বাড্ডা পাঁচতলা বাজার থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি কিনেছেন মনিরুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, গরুর মাংস কিনতে গিয়ে গিয়ে মুরগির মাংস নিয়েছি। গত সপ্তাহেও দেখলাম ৭৫০ টাকা কেজি, আজকে ৭৮০ টাকার নিচে দেবেই না। আমিও রাগ করে চলে এসে মুরগি নিয়েছি।
বাজার করতে আসা মো. রফিকুল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় আজকের বাজারে মুরগি ও মাছের দাম কিছুটা কম। তবে গরুর মাংসটা আগের মতোই। একটা সময় প্রতি সপ্তাহে একদিন গরুর মাংস খাওয়া হতো। এখন আর আগের মতো প্রতি সপ্তাহেই গরুর মাংস কেনা যায় না। কিনতে গেলেও বারবার হিসেব করতে হয়। তবে মুরগির দাম কম থাকাটা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য কিছুটা স্বস্তির জায়গা।
মুরগির মাংস বিক্রেতা মনসুর আলী বলেন, বাজারে মুরগির চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। দামটাও তুলনামূলক কমই। দাম কম থাকলে আমাদের বিক্রিও ভালো থাকে, আবার বেড়ে গেলেই বিক্রি কমে যায়। এখন আলহামদুলিল্লাহ, ভালো বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস বিক্রেতা শান্ত ইসলাম বলেন, এখন খামারিরা গরু কম ছাড়ছে। সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে তারা গরু তৈরি করছে। যেকারণে এখন যেগুলোও বিক্রি হচ্ছে দাম তুলনামূলক একটু বেশি দামে। তাই মাংসের বাজারেও তার প্রভাবটা পড়েছে।
তিনি বলেন, গরুর মাংস মোটামুটি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যেই আটকে আছে। আর কমবে বলে মনে হয় না। এই দামে বিক্রি করতে পারলে আমাদেরও কিছু লাভ থাকে। এর কমে বিক্রি করলে কিছু থাকে না। তবে আমরা যদি একটু দুই নম্বরি করি, তাহলেই আবার কমে বিক্রি করতে পারবো। আমরা তো চর্বিটা আলাদা করে রেখে দেই, সেটা যদি মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে দেই, তাহলেই দাম কমে আসবে।