আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চলমান মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে অতিমারি রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের। একই সময়ে ভাইরাসটির থাবায় নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় পৌনে সাত লাখে পৌঁছেছে।
সর্বশেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় সংক্রমিতদের সংখ্যা ২০ কোটি ৫৪ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অন্য দিকে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ছাড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে ১০ হাজার ২২১ জনের। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে আড়াই শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে করোনায় প্রাণ হারানোদের তালিকায় মৃতের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬২ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ছয় লাখ ৭৩ হাজার ৮০৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজারের বেশি। এতে অতিমারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার ২৫১ জনে পৌঁছেছে।
গেল ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৬৯৮ জন। এছাড়া ভাইরাসটির থাবায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৭০ লাখ ২৭ হাজার ৪৬৬ জন আক্রান্ত এবং ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৬২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপর দিকে শেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ৫৭৯ জন লোক। আর নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩০ হাজার ৬২৫ জন।
এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪৬ জন ছাড়িয়েছে। আর প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের থাবায় প্রাণ গেছে এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জনের।
এ দিকে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনা ভাইরাসে শনাক্তের দিক থেকে তৃতীয়। আর মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ভাইরাসটির থাবায় মারা গেছেন এক হাজার ১২৩ জন। এছাড়া নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৭৮৮ জন। অপর দিকে মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি দুই লাখ ৪৯ হাজার ১৭৬ জন। আর প্রাণ গেছে পাঁচ লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জনের।
অপর দিকে করোনায় আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটি। গেল ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনার থাবায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ৫১৯ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৬৪১ জন। এতে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭৪ জনে পৌঁছেছে। আর মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ২৯ হাজার ৭০২ জনের।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ৬৩ লাখ ৭০ হাজার ৪২৯ জন ফ্রান্সে, রাশিয়ায় ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৮৫৯ জন, ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৮০০ জন যুক্তরাজ্যে, ইতালিতে ৪৪ লাখ ১৩ হাজার ১৬২ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৯ লাখ ৯৬ হাজার ২২৪ জন, স্পেনে ৪৬ লাখ ৬০ হাজার ৪৭৩ জন, ৩৮ লাখ ৮ হাজার ৮১০ জন জার্মানিতে এবং মেক্সিকোতে ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্য দিকে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১২ হাজার ৪১০ জন, আর এক লাখ ৬৭ হাজার ২৪১ জন রাশিয়ায়, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩০ হাজার ৬০৭ জন, এক লাখ ২৮ হাজার ৩০৪ জন ইতালিতে, ৫২ হাজার ৫৬৫ জন তুরস্কে, স্পেনে ৮২ হাজার ৩২০ জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ৩৩২ জন এবং দুই লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৬ জন মেক্সিকোতে মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।
বিএসডি/এমএম