আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনা ভাইরাস এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির শুরু সেখানে হলেও খুব দ্রুতই দেশটিতে অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছিল। তবে চীনে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের খবরে বলা হয়, চীনে কোভিড-১৯ এর মারাত্মক সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তিনশোর বেশি সংক্রমণ গত দশ দিনে শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটির যে নগরী থেকে করোনা ভাইরাস প্রথম ছড়িয়েছিল, সেই হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, উহানে মোট সাতজনের শরীরে শক্তিশালী এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।
এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে চীন খুব ঝুঁকির মধ্যে আছে কি না তা নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে এখন আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। চীনের গণমাধ্যমে এখন এই করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবই শিরোনাম দখল করে আছে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় একজন বিশেষজ্ঞ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার বিভিন্ন শহরে নতুন করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং কোটি কোটি মানুষকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। চীনে কত মানুষ পুরোপুরি টিকা পেয়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে চীনা কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, এখন পর্যন্ত ১৬০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
নতুন করে চীনের মোট ১৫টি প্রদেশ এবং পৌর এলাকায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি এলাকার সংক্রমণই চীনের পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংশু প্রদেশের নানজিং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য কর্তৃপক্ষ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং সেখানকার পর্যটন মৌসুমকে দায়ী করছে।
আরও পড়ুন- রাশিয়ার ২৪ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র
চীনে শনাক্ত হওয়া সংক্রমণ অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো বেশ কম। যদিও গত বছর প্রথম সেদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে আনার পর এই প্রথম এত বেশি সংখ্যায় এবং এলাকাগুলোতে সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই দফায় প্রথম কোভিডের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল নানজিং বিমানবন্দরে। রাশিয়া থেকে আসা একটি উড়োজাহাজ পরিষ্কারের কাজ করেছিলেন যে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা, তারাই প্রথম আক্রান্ত হন।
এরপরই চীনা কর্তৃপক্ষ অতিদ্রুত শহরটির ৯২ লাখ মানুষের সবাইকে পরীক্ষা করেন এবং স্থানীয়ভাবে লকডাউন জারি করেন। কিন্তু এই সপ্তাহান্তে চীনের হুনান প্রদেশের জাংজিয়াজি শহরে বেশকিছু সংক্রমণ ধরা পড়ে। মনে করা হয়, নানজিং এর কিছু মানুষ সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাদের মাধ্যমেই সেখানে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন- রাশিয়ার ২৪ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র
চীনের গ্লোবাল টাইমস পত্রিকায় এবারের সংক্রমণকে উহানের পর সবচেয়ে মারাত্মক বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। পত্রিকাটির পৃথক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধের ব্যবস্থায় মারাত্মক ত্রুটি ছিল।
বিএসডি/এমএম