অর্থনীতি ডেস্ক,
চিকিৎসক ও আইনজীবীদের কর ফাঁকি বের করে আইনি ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চিঠিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ করেছে চিকিৎসক ও আইনজীবীদের আয়কর বিবরণী সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে ফাঁকি বের করে ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের অধীনে ব্যবস্থা নিতে।
গত সপ্তাহে এনবিআরকে দেওয়া একটি চিঠিতে দুদক জানতে চেয়েছে, কর ফাঁকি রোধে বিশেষায়িত চিকিৎসক ও আইনজীবীরা তাদের রোগী বা ক্লায়েন্টদের সেবা দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া অর্থের বিপরীতে চালান বা রশিদ বাধ্যতামূলক করেছেন কি-না।
এ বিষয়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন ও বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে এনবিআর ডাক্তার ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের প্রকৃত আয় জানতে একটি ডাটাবেস প্রস্তুত করছেন।
তিনি বলেন, রাজধানীতে যেসব চিকিৎসক ও আইনজীবীদের চেম্বার রয়েছে, তাদের জমা দেওয়া আয়কর বিবরণীর সঙ্গে প্রকৃত আয় মিলিয়ে দেখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের চেম্বারে গিয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- একজন চিকিৎসকের আয়, প্রতিদিন একজন চিকিৎসকের চেম্বারে আসা রোগীর সংখ্যা, নেওয়া ফির পরিমাণ, চেম্বারের সংখ্যা ও কর প্রদানের পরিমাণ।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার ড. মো মোজাম্মেল হক খান বলেন, বিভিন্ন অভিযোগ কিংবা তদন্ত কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দুদক অনেক সময়ই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে চিঠি দিয়ে থাকে। এনবিআর- দুদকের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান খুবই স্বাভাবিক বিষয়। নতুন করে কোনো চিঠি দেওয়া হয়েছে কি-না, এ মুহূর্তে বলতে পারছি না।
এনবিআর সূত্রে আরও জানা গেছে, এখন পর্যন্ত যতটুকু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তাতে কর কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন যে চিকিৎসকরা কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য আয়কর রিটার্নে তাদের প্রকৃত আয় গোপন করছেন। আমাদের ট্যাক্স এজেন্টরা কর ফাঁকির প্রমাণ পাচ্ছেন।
বর্তমানে এমন চিকিৎসক ও আইনজীবীদের চিহ্নিত করতে কাজ করা হচ্ছে যাদের করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর নেই কিন্তু ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা বা তার বেশি ফি নেন। এছাড়া যেসব ভারতীয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা ঢাকায় অনুশীলন করছেন তাদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, চিকিৎসক ও আইনজীবীদের ডেটাবেস প্রয়োজনীয় তথ্য সহজে পেতে এনবিআর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের মতো সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে চায়।
বিএসডি/আইপি