আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্য-এশিয়ার বৃহত্তম ও তেলসমৃদ্ধ দেশ কাজাখস্তানে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া সহিংস-বিক্ষোভে গত কয়েকদিনে শতাধিক নিহত ও আরও প্রায় এক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে কাজাখস্তানে সেনাবহর পাঠিয়েছে প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়া।
নিহত ও আহত বিক্ষোভকারীদের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তবে কাজাখস্তান পুলিশের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বিবিসি বলেছে, গত প্রায় চার দিনের দাঙ্গায় বিক্ষোভকারীদের হাতে অন্তত ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রাণঘাতী এই সংঘাতে আহত হয়েছেন আরও ৩৫৩ জন।
কাজাখ পুলিশের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, দেশের প্রধান শহর আলমাতিতে বিক্ষুব্ধ জনতা সরকারি বিভিন্ন দফতর ও পুলিশ স্টেশন দখল করার চেষ্টা চালালে বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা হামলা চালায়। উভয়পক্ষের সংঘাতে হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ট তোকায়েভের অনুরোধে কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিএসটিও) চুক্তির আওতায় দেশটিতে সেনাবাহিনী পাঠাচ্ছে রাশিয়া। এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশগুলো হলো বেলারুশ, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও আর্মেনিয়া।
এলপিজি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত রোববার (২ জানুয়ারি) থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানের প্রধান শহর আলমাতি সহ ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমশ সহিংস রাজনৈতিক সংঘাতে রূপ নেয়।
জনতার রোষ শান্ত করতে ৫ জানুয়ারি দেশটির প্রধানমন্ত্রী আসকার মমিন মন্ত্রিপরিষদসহ পদত্যাগ করেছেন। তারপর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে দেশজুড়ে, ঘোষণা করা হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ; কিন্তু তাতেও থামছে না জনতার বিক্ষোভ।
প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ট তোকায়েভ চলমান এই সংঘাতের জন্য বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছেন।
বিবিসির সংবাদ বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, জনতার বিক্ষোভের আড়ালে কাজাখস্তানে সহিংসতা চালাচ্ছে সরকাকর বিরোধী গোষ্ঠী।
বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, ঐতিহ্যগতভাবে মধ্য এশিয়ার এই অঞ্চলের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর দেশটিতে অধিকাংশ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ১০০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কাজাখস্তানে কার্যত কোনো বিরোধী দল নেই।
বিএসডি/এসএ