আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বের কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আফগানিস্তান হস্তক্ষেপ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। শনিবার (২৭ নভেম্বর) এক অডিও বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
রোববার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। হাসান আখুন্দের অডিও বার্তাটি আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। কাবুলের ক্ষমতা দখল এবং সেপ্টেম্বরের শুরুতে সরকার গঠনের পর তালেবান প্রধানমন্ত্রীর অডিও বার্তা এটিই প্রথম।
শনিবারের এই অডিও বার্তায় যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে সহায়তা দিতেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আর তাই আগামী সপ্তাহে কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানের মধ্যকার নির্ধারিত বৈঠকের আগে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের এই বক্তব্যকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রায় ৩০ মিনিটের এই অডিও বার্তায় মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ বলেন, ‘আমরা সকল দেশকে এই নিশ্চিয়তা দিচ্ছি যে- আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবো না এবং সবার সাথেই আমরা ভালো সম্পর্ক চাই।’
আফগান জনগণকে উদ্দেশ করে হাসান আখুন্দ বলেন, ‘আফগানিস্তানের বেকারত্ব ও খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার জন্য তালেবান দায়ী নয় বরং দেশে বিদ্যমান সকল সমস্যাই সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া দায়।’
পাশতু ভাষায় দেওয়া ওই ভাষণে তিনি দাবি করেন, তালেবান তাদের প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেছে; কাজেই জনগণের উচিত তালেবান সরকারের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করা। দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, তালেবান সরকার জনগণের ‘রিজিকের’ সংস্থান করছে না বরং রিজিক আসছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহ তার বান্দাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন।
তালেবান প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে দেশে এতটা নিরাপত্তাহীনতা ছিল যে, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মানুষকে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে থাকতে হতো; কিন্তু এখন সারাদেশে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা বিরাজ করছে। তিনি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইসলামি শাসনব্যবস্থা রক্ষা করার জন্য তালেবান সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান এবং আফগানিস্তানের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠন করার লক্ষ্যে কাজ করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য বিশ্বের কোনো দেশই এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে।