ফরিদপুর ব্যুরো:
ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের সময় রোগীর পেটের ভেতর কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। প্রতিবেদনে কাউকে দোষী বলা হয়নি। তবে আগামীতে অধিকতর সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে এ প্রতিবেদন পেশ করে তদন্ত কমিটি।
হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান যুগান্তরকে জানান, ঘটনার জন্য কে দায়ী, তা প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থার সুপারিশও করা হয়নি। তবে প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে অস্ত্রোপচারের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই এবং দেড় বছরের বেশি সময় পর তা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পেট থেকে বের করার ব্যাপারে গত ১২ ডিসেম্বর তিন সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি ছিলেন সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান। অপর দুই সদস্য হলেন গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা ও সার্জারি বিভাগের ডা. মো. কামরুজ্জামান।
প্রতিবেদনে বলা হয়- গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি ইউনিট-২ এর দায়িত্বে নিয়োজিত সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীনে এ অস্ত্রোপচার হয়। এ সময় আরও ৩-৪ জন চিকিৎসক অংশ নেন। তবে কার গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তা উল্লেখ করা হয়নি।
বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালের উদ্ধৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে- এমন ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, মনিরা খাতুন (১৮) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে। তিনি মেজিনট্রিক ফিস্ট (রক্তের দলা) সমস্যা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন ২০২০ সালের মার্চে। এরপর ৩ মার্চ সার্জারি বিভাগ ইউনিট টু-তে তার অস্ত্রোপচার হয়। ওই সময় চিকিৎসকদের অজ্ঞাতসারে অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত অর্টারি ফরসেপ (কাঁচি) পেটের মধ্যে রেখে সেলাই করা হয়।
বিষয়টি জানার পর ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর একই হাসপাতাল থেকে পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তরুণীর পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়। এ ঘটনায় গত ১২ ডিসেম্বর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিএসডি/এসএফ