ধর্ম ডেস্কঃ
১৯৪০ সালের কথা। কিশোরগঞ্জের প্রাণকেন্দ্রে ছিল একটি নাম না জানা মসজিদ। নামাজের সময় হলে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে তাদের পূজার শোভাযাত্রা নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় মুসুল্লিরা। অবস্থা সংঘর্ষের দিকে যাচ্ছিল দেখে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকরা এলাকায় গুর্খা সেনা মোতায়েন করে। স্থানীয়দের মতে, ওই সেনারা মুসলমানদের ওপর আগে থেকেই খেপেছিল। রাত আটটার দিকে মসজিদ ও তার সামনে অবস্থানরত মুসুল্লিদের ওপর তারা গুলি চালায়। এতে চারজন মুসুল্লি শহীদ হন। আহত হন বেশ কয়েকজন। এ খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতারা। তখন উপস্থিত আলেমরা মসজিদটিকে ‘শহীদী মসজিদ’ নাম দেন। এ ঘটনার কথা প্রতিবেদককে জানালেন শহীদী মসজিদের বর্তমান খতিব মাওলানা ইমদাদুল্লাহর কাছ থেকে। এখনও মসজিদের প্রাচীন স্তম্ভগুলোর গায়ে ৮১ বছর আগে ছোড়া গুলির ক্ষতস্থান স্পষ্ট।
শহীদী মসজিদের মূল স্থাপনাটি কবে তৈরি হয়েছে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা নেই কারও। তবে বর্তমান অবকাঠামোটি করে যান ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা মাওলানা আতহার আলী খান। সিলেটে জন্ম নেওয়া দেওবন্দি এ আলেম ১৯৩৮ সালে কিশোরগঞ্জ আসেন। তখন তিনি মসজিদটিকে আধুনিক করার উদ্যোগ নেন এবং মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এক সুউচ্চ পাঁচতলা মিনারের ভিত্তি স্থাপন করেন। সেইসঙ্গে আরও কিছু সংস্কার করেন।
পাঁচতলা মসজিদটিতে একসঙ্গে অন্তত দেড় হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদে এখন দু’টি মেহরাব। একটি মূল মসজিদের মধ্যখানে, অপরটি বর্ধিত হওয়ার পর সম্পূর্ণ স্থাপনার মাঝে নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় মেহরাব থেকেই জুমার নামাজের খুতবাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরিচালনা করা হয়।
জেলার বিখ্যাত পাগলা মসজিদের পরই এই মসজিদটি দেখতে আসেন পর্যটকরা।
বিএসডি/এএ