নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য, আসল জায়গা থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে এইসব ঘটনা ঘটায়। আমরা এই সব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না। সরকার নিরেপক্ষ না হলে যত ভালো লোককেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হোক, নির্বাচন নিরপেক্ষ করা সম্ভব না। সরকার যদি নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা না করে, তাহলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। এজন্য আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি- আগে পদত্যাগ কর, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দাও। তারা নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তারা (সরকার) তা করবে না। আমাদের কথা পরিষ্কার- নির্বাচন নির্বাচন খেলা আর হবে না।’
‘বিএনপি পালায়, আওয়ামী লীগ পালায় না’- আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন মন্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো ১৯৭১ সালেই পালিয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানে পালিয়েছে, বাকিরা ভারতে পালিয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে থেকে যুদ্ধ করেছে। আমরা কখনো পালিয়ে যাওয়ার দল না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, “জিয়াউর রহমান অল্পদিন বেঁচে ছিলেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে ৪ থেকে ৫ বছর সময় পেয়েছিলেন। এই সময়ে তিনি পুরো দেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এদেশকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিল আওয়ামি লীগ। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নাম পাল্টে দিতে হবে, এটাকে বলতে হবে ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি।’ এগুলো আমার কথা না, এগুলো ইতিহাস।”
‘বিএনপি গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছে’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ মন্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোন গণতন্ত্র? তাদের গণতন্ত্র হচ্ছে- আমরা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকব আর তোমরা সারাজীবন ধরে প্রজা হয়ে থাকবা। এটাই হচ্ছে তাদের গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্য।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে সব জায়গা সংকুচিত করে ফেলেছে। আগে ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে আমরা সভা-সমাবেশ করতাম, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেটাকে স্টেডিয়াম করে দিল। এরপর মুক্তাঙ্গনও বন্ধ করে দিল। তার আগে মানিক মিয়া এভিনিউতে সভা-সমাবেশ করা হত। সেখানেও ডিভাইডার দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। প্রেসক্লাবের সামনে ছোট একটা জায়গা, সেখানেও বন্ধ করে দেওয়া হল। এইভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে না।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি নূর আফরোজ খান জ্যােতির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ওলামা দলের আহ্বায়ক মওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হোক প্রমুখ।
বিএসডি / আইকে