জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের মা ও পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দুটি করে।
ওই দুই মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫ হাজার ৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ সহিংসতার সময় ও পরে অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম।
জানা যায়, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বটতৈল ইউপি নির্বাচনের আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মিজানুর রহমান ওরফে মিন্টু ফকির ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোমিন মণ্ডলের সমর্থকেরা অতর্কিত হামলা চালান। এতে মিন্টুসহ ১০ জন আহত হন। মিন্টুকে হাসপাতালে ভর্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর খাজানগর এলাকায় সড়কের ওপর জড়ো হতে থাকেন তার সমর্থকরা।
কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আহত প্রার্থীর কয়েক হাজার কর্মী জড়ো হয়ে ইটপাটকেল, লাঠি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোস্তপাড়া ক্লাবমোড়ের দিকে এগোতে থাকেন। এতে কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা উত্তেজিত সমর্থকদের গতিরোধ করলে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ১০ সমর্থক আহত হন। এ ছাড়া আহত হন পুলিশের পাঁচ সদস্য।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা নৌকা প্রার্থীর মোমিন মণ্ডলকে এ হামলার জন্য দায়ী করেন। বিক্ষোভ মিছিল করে মোমিন মণ্ডলকে গ্রেফতারের দাবি জানান। বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বেলা তিনটার দিকে ওই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে প্রায় পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমানের মা শেফালী মান্নান বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা করেন।
কুষ্টিয়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইউপি নির্বাচন ঘিরে কেউ যদি জল ঘোলা করার চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে পুলিশ শক্ত অবস্থান নেবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বলেন, ঘটনার সময় ও পরে আটক ২০ জনকে পুলিশের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের আজ আদালতে পাঠানো হচ্ছে। ফাঁকা গুলি না ছুড়লে পরিস্থিতি শান্ত হতো না। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিএসডি/এসএফ