কৃষি ডেস্ক,
কুড়িগ্রামে দীর্ঘদিন বন্যার পানিতে ডুবে থাকায় পঁচে গেছে আমনের আবাদ। এ অঞ্চলে নদ-নদীর বন্যার পানি কমে সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কৃষি জমি ও ক্ষেত-খামার থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হয়েছে আবাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এ বছর চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান দীর্ঘদিন পানিতে ডুবে থাকায় বিনষ্টের পরিমাণ অনেক বেশি। এদিকে চারা ধান সংকটে রয়েছে কৃষকরা। বর্তমানে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায়, এসব জমিতে কৃষকেরা নতুন করে চারা লাগানোর উপায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম জেলার কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, জেলায় বন্যায় ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির রোপা আমন তলিয়েছে। এছাড়া ১১৫ হেক্টর বীজতলাসহ ২৮৫ হেক্টর জমির শাকসবজিও পানিতে তলিয়েছে। তলিয়ে যাওয়া রোপা আমনের বেশিরভাগই পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, অসময়ে বন্যা হওয়ায় রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চর অঞ্চলে নিচু এলাকার গুলোতে সব রোপা পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। সেখান থেকে আর আমন ধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে নতুন করে আবার রোপা লাগানোর চারা বা বীজতলা নেই। বেশি ভাগ কৃষকের আর্থিক অবস্থায়ও ভালো নেই।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার,গঙ্গাধর নদের অববাহিকা এবং ধরলা নদীর অববাহিকার ৩ শতাধিক চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের চাষ করা আমন ধান কোথাও ১০ দিন আবার কোথাও ১৫ দিনের ওপর পানিতে ডুবে রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় এখনো পানির নিচেই রয়েছে রোপা আমন। আমনের এমন ক্ষতি হওয়ায় হতাশ কৃষকরা।
নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের ব্যাপারিটারী গ্রামের কৃষক লস্কর আলী জানিয়েছেন, চার বিঘা ক্ষেতে আমন আবাদ করেছিলেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে সব ধানগাছ পঁচে গেছে। সেখানে আর ধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। পুনরায় রোপা লাগানোর তার সামর্থ্য নেই।
একই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম, নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নষ্ট হয়ে যাওয়া জমিতে নতুন করে রোপার চারা লাগানো ব্যয়সাধ্য। এছাড়া চারা ধানও পাওয়া যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানিয়েছেন, বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ফসলের পরিসংখ্যান আমাদের হাতে এসেছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় এখনো পানি থাকায় ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি।
বিএসডি/এএ