পেশাদার মনোভাব এবং সে জন্য ফিটনেস ধরে রাখার অনুপম উদাহরণ হয়ে ৩৬ বছর বয়সেও খেলে যাচ্ছেন রোনালদো। দুর্দান্ত শারীরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে তাঁর খাদ্যাভ্যাসও ক্রীড়াজগতেরই অনেক তারকার কাছে উদাহরণ। ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় বহু আগেই বর্জন করেছেন এই পর্তুগিজ তারকা। এ নিয়ে প্যাট্রিক এভরা একবার বলেছিলেন, ‘অনুশীলনের খুব ক্লান্তি নিয়ে তার বাসায় গিয়েছিলাম। কিন্তু খাবার টেবিলে দেখলাম শুধু একটা সালাদ, মুরগির বুকের মাংস আর পানি, কোনো পানীয় নেই।’
এদিকে কোকাকোলা ইউরোর অফিশিয়াল স্পনসর। স্বাভাবিকভাবেই সংবাদ সম্মেলন টেবিলে তারা নিজেদের কোমল পানীয়ের বোতল রেখেছে। খেলাধুলার জগতে স্পনসরদের এমন কিছু নতুন নয়। কিন্তু রোনালদো ফিটনেস নিয়ে চরম নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলেন বলেই তো বাকিদের কাছে উদাহরণ। পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোসের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসার পর তাঁর চোখ পড়ে সামনে সাজানো কোকাকোলার দুটি বোতল। তৎক্ষণাৎ বোতল দুটি ক্যামেরার লেন্স থেকে সরিয়ে রেখে রোনালদো সবার প্রতি বলেন ‘পানি খান’। এরপর একটি পানির বোতল সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন। ইউরোয় আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় হাঙ্গেরির মুখোমুখি হয়ে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করবে পর্তুগাল।
ইউরোয় ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পাঁচটি টুর্নামেন্ট খেলার কীর্তি গড়ার সামনে রোনালদো। অনন্য এক গোলের রেকর্ডও হাতছানি দিচ্ছে তাঁকে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে আর মাত্র ৬ গোল চাই রোনালদোর। এই রেকর্ড সামনে রেখেই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড জানালেন, বয়সের কারণে তিনি আর আগের মতো নেই, কিন্তু মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা ও কৌশল দুটি জানেন, ‘১৮ বছর বয়সে যেমন ছিলাম, এখন তো আর তেমন নেই। এখন আরও পরিণত হয়েছি…কীভাবে মানিয়ে নিতে হয়, তা জানি এবং ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে সফলতা পেয়েছি।’
ইতালিয়ান সিরি ‘আ’-তে গত মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেও জুভেন্টাসকে লিগ জেতাতে পারেননি রোনালদো। গুঞ্জন আছে, ইতালিয়ান ক্লাবটি ছেড়ে দেবে রোনালদোকে। আবার এমন গুঞ্জনও চলছে, রোনালদো নিজেই জুভেন্টাস ছাড়তে চান। তিন মৌসুম হলো জুভেন্টাসে খেলছেন তিনি। জুভেন্টাসের সঙ্গে চুক্তির আরও এক বছর বাকি আছে রোনালদোর। তবু সংবাদ সম্মেলনে জুভেন্টাসে রোনালদোর ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা উঠল। পর্তুগিজ তারকার কথায় অবশ্য ইতালিয়ান ক্লাবটিতে না থাকার সম্ভাবনার সুরও ছিল। তবে খোলাসা করে কিছুই বলেননি রোনালদো, ‘এখন আমার বয়স ৩৬ বছর। সামনে যা কিছুই ঘটুক না কেন, সেটা আমার জন্য ভালোই হবে—জুভেন্টাসে থাকি কিংবা চলে যাই।’
রোনালদো জানালেন আপাতত তাঁর ভাবনায় ইউরো, ‘এখন ইউরোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমার পঞ্চম ইউরো। কিন্তু নিজের কাছে মনে হচ্ছে, এটা আমার প্রথম ইউরো। আমরা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো খেলতে চাই।’