নিজস্ব প্রতিবেদক
বাজারে চামড়ার সরবরাহ সংকুচিত করতে কোরবানির ঈদের ১০ দিন ঢাকায় চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, যারা স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণ করবেন। সংরক্ষণ উপযোগী করার জন্য সারা দেশে লবণ সরবরাহ করা হবে।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে কোরবানির চামড়ার দাম নির্ধারণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, রোজার ঈদের পরেই প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছিলেন কোরবানির চামড়া যাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা হয়। আমরা সেই নির্দেশ মতো কাজ করছি। রাস্তায় কোরবানির পশু চলাচলের ক্ষেত্রে সব ধরেনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কোরবানির চামড়া বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এবার প্রথম ব্যবস্থা নিয়েছি সারা দেশে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণ করা হবে। এটা সুষ্ঠু বিপণন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্যানারিমালিকদের প্রণোদনা বাবদ সরকারের কাছে ২৫০ কোটি টাকা পাওনা ছিল। সেই টাকাও অর্থ বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ছাড় করে দিয়েছে। যাতে তাদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। কাঁচা চামড়া বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি নিষিদ্ধ তালিকায় ছিল সেখান থেকে তুলে দিচ্ছি। যাতে স্থানীয় বাজারে সঠিক মূল্য না পাওয়া যায় তাহলে সরাসরি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা চামড়া বিক্রি করে দিতে পারেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাজারে চামড়ার সরবরাহ সংকুচিত করার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১০ দিন ঢাকাতে চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এসব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা আশা করি বাজারে চামড়ার দাম বৃদ্ধি পাবে। এই চামড়ার যারা হকদার এতিম তারা ন্যায্য মূল্য পাবে। আমাদের প্রচেষ্টা সফল হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি বলেন, আমরা দুইটা তথ্য চিত্র তৈরি করেছি, যেটা সারা দেশেই প্রদর্শনী করা হবে। তথ্যচিত্রে আমরা কীভাবে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রসেস করতে হয় সেটা শেখানোর চেষ্টা করব। এছাড়া আমরা ৮৬ হাজার কসাইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এক্ষেত্রে পরিবেশ, পানি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সকলেই আমাদের সহযোগিতা করেছে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা যেহেতু বিনামূল্যে লবণ দিচ্ছি, প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং চামড়ার লবণ লাগাতে যে শ্রম ব্যয় হয় সেসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই এবার চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা যৌক্তিক।
ঈদের ১০ দিন ঢাকাতে চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, তাহলে গ্রামে যারা চামড়া সংগ্রহ করবে তারা কী করবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণ করবেন। সংরক্ষণ উপযোগী করার জন্যই আমরা সারা দেশে লবণ সরবরাহ করা হবে।
এসময় বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা এবছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকেই কোরবানির চামড়া ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন অংশীজনসহ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। কোরবানি চামড়ার বড় একটা অংশ সুবিধাভোগী হলো এতিমখানা, মাদ্রাসা। যথাযথ মূল্য না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রতিষ্ঠানগুলো।