কিভাবে কোষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এই বিষয়ে মতামত দিয়েছেন ফরাজি হাসপাতাল,বারিধারা শাখা,ঢাকা
ক্লিনিক্যাল ফেলো-সেন্টার ফর ক্লিনিক্যাল এক্সিলেন্স এন্ড রিসার্চ এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. ইব্রাহিম মাসুম বিল্লাহ সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন ফয়সাল আহমেদ।
ফয়সাল আহমেদ-কোষ্টকাঠিন্য কি?
ডা. ইব্রাহিম মাসুম বিল্লাহ-জাতি হিসেবে আমরা ভোজনরসিক। ভোজনে রসিকতা থাকলেও আমাদের ভোজনের সঠিক অভ্যাস খুব একটা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গড়ে উঠেনি। যার দরুণ প্রায় আমাদের পেটের পীড়াসহ নানা সমস্যা লেগেই থাকে। এ রকম একটি কমন সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। কমন সমস্যা হলেও সংকোচ আর লজ্জার কারণেই আমরা প্রায় বিষয়টি এড়িয়ে যায় আর সমস্যাকে বড় করে তুলি। পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদ অত্যাসন্ন। নিয়মিত আমরা ভাজাপোড়া খাচ্ছিই। কুরাবনির ঈদে সেটার পরিমাণ আরো বাড়ে। বিশেষত কুরবানিতে লাল মাংস বস Red Meat খাওয়া হয় বেশি। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাকে আরো জোরদার করে। কথায় আছে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম।
ফয়সাল আহমেদ-কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাচার উপায়?
ডা. ইব্রাহিম মাসুম বিল্লাহ –কুরবানি ঈদের জম্পেশ খাওয়াদাওয়ার পূর্বেই জেনে নিন কোন কোন বিষয়টি মেনে চললে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকা যাবে। বিষয়গুলোকে আমরা দুইভাবে উপস্থাপন করছি। কতগুলো বিষয় আমাদের পালন করতে হবে আর কতগুলো বিষয় আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। প্রথমে জেনে নিন কী কী পালন করবেন।
প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করব। খাদ্যতালিকায় ফাইবারসমৃদ্ধ বা আঁশযুক্ত খাবার ও সবুজ শাকসবজির পরিমাণ বাড়াবো। ইসবগুলের ভূষি পানিতে ভিজিয়ে খেলেও পাওয়া যাবে। সব সময় প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট ঘাম ঝরানো ব্যায়াম করার চেষ্টা করার পাশাপাশি সবসময় নিজেকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করতে হবে।
ফয়সাল আহমেদ-সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্যতায় ভোগার কারণ কী?
ডা. ইব্রাহিম মাসুম বিল্লাহ-অ্যাকচু কনস্টিপেশন বা সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্যতা মূলত ভুল জীবনধারণেরকারণে দেখা দেয়। যেমন-
* আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া তথা শাক সবজি কম খাওয়া
* নিয়মিত মলত্যাগ না করা বা মলত্যাগ আটকে রাখা
* নিয়মিত খাবার না খাওয়া
* পরিমিত ঘুম না হওয়া
* চিন্তা অবসাদগ্রস্ত থাকা ইত্যাদি
* আইবিএস এর সমস্যা থাকা
* ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় যেমন- ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, এন্টি স্পাজমোডিক, এন্টি ডায়েরিয়াল ড্রাগস, আয়রন ট্যাবলেট, এলুমিনিয়াম যুক্ত অ্যান্টাসিড খেলে।
* দৈনিক অত্যাধিক পরিমান প্রোটিন কিংবা বেশি মাংস খেলে সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্যতা দেখা দিতে পারে।
ফয়সাল আহমেদ-কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কি কি খাবার খাওয়া যাবে?
ডা. ইব্রাহিম মাসুম বিল্লাহ-আঁশযুক্ত খাবার খান
নিয়মিত ফাইবার বা আঁশজাতীয় খাবার না খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তত ২০ থেকে ৩৫ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার থাকা উচিত। আপেল, গাজর, কমলা, ওটমিল, শিমজাতীয় খাবার (মটর, শিম, ডাল) ও ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার বা শস্যের পরিবর্তে পূর্ণশস্য হিসেবে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন লাল চাল, আটা ও পাস্তা খেতে পারেন। ফলের জুস করার পরিবর্তে আস্ত ফল বিচিসহ খাওয়া ভালো। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ পাওয়া যায়।
মধু ও লেবু উপকারি
উষ্ণ গরম পানিতে মধু ও লেবু মিশিয়ে সকালবেলা খালি পেটে খেতে হবে। এই উপাদান দুটি পেটের সমস্যা দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে। এছাড়া শরীর থেকে টক্সিন বা ক্ষতিকর উপাদান বের করতে লেবু অত্যন্ত উপকারি।
বিএসডি/ফয়সাল