স্পোর্টস ডেস্ক
সদ্য সমাপ্ত আইপিএলটা বিরাট কোহলি কিংবা তার ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জন্য বিশেষই বটে। ১৮ বছরের আইপিএল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে আরসিবি। তবে বেঙ্গালুরু সমর্থকদের হুড়োহুড়ির কারণে ভারতীয় ক্রিকেটে এটিকে ট্র্যাজেডির মৌসুম হিসেবেও মনে রাখা হবে।
শিরোপা জয়ের প্যারেডে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন সমর্থক, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আগামী ১৪ জুন অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই ভবিষ্যতে শিরোপা উদযাপন নিয়ে নির্দেশনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
বোর্ডের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আইপিএল জয়ের পর কিভাবে উৎসব হবে এবং কী কী মেনে চলতে হবে, তাই নিয়ে একটি সুষ্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা হতে পারে। প্রতিটি দলকেই সেই নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিয়ম ভাঙলে শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। বোর্ড এই ঘটনার থেকে দূরত্ব রাখলেও বিষয়টি তাদের নজর এড়ায়নি। ভবিষ্যতে যাতে এমন না ঘটে তার জন্য এখন থেকেই সতর্ক তারা।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আইপিএল জয়ের উৎসব করার কথা ছিল আরসিবি দলের। ৩৫ হাজারের স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য হাজির হয়েছিলেন আড়াই লাখের বেশি মানুষ। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১১ জনের। তারপর থেকে কর্ণাটক সরকার, আরসিবি এবং পুলিশের মধ্যে দায় এড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
ওই ঘটনার পর এক বোর্ডের সচিব দেবজিৎ সাইকীয়া বলেছিলেন, “চোখ খুলে দেওয়ার মতো ঘটনা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কী করা দরকার সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। প্রতি বছরই কেউ না কেউ জিতবে। প্রতি বছরই উৎসব হবে তাদের শহরে। তাই ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার জন্য শিক্ষা নিতে হবে। এই মুহূর্তে কোনও দলের উৎসবের সঙ্গে বোর্ডের কোনও যোগাযোগ নেই।”
সাইকীয়া উদাহরণ দিয়েছিলেন আইপিএল ফাইনাল আয়োজনের। বলেন, “নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন এক লক্ষ ৩২ হাজার দর্শক (আদতে ৯১ হাজারের কাছাকাছি)। নিরাপত্তা এবং দর্শকদের সামলানোর ব্যাপারে ছোটখাটো ঘটনাতেও আমরা নজর দিয়েছি। একটাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সব নিয়ন্ত্রণে ছিল। বেঙ্গালুরুতে যা হয়েছে তাতে বোর্ডের কোনও ভূমিকা নেই।”
আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল জানিয়েছিলেন, অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব কাদের ছিল সেটা তারা জানেন না। ধুমালের কথায়, “গোটা ঘটনা আমরা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভবিষ্যতে এমন হওয়া চলবে না। ট্রফি নিয়ে শোভাযাত্রা বা বেঙ্গালুরুতে কোথায় উৎসব হবে, এ ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। কারা আয়োজন করেছে, কীভাবে অত মানুষ এলো ওখানে, পুরোটাই আমাদের অজানা।”