খুবি প্রতিনিধি:
সমাজে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য শীতকাল এক ধরনের অভিশাপ। শীতকালে তারা না পারে শান্তিতে ঘুমাতে, না পারে ভালোভাবে খেতে, না পারে ঠিকমতো কাজ করতে। এমনই শীতে কষ্ট পাওয়া খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরিপুর ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সামাজিক সংগঠন রোটার্যাক্ট ক্লাব অব খুলনা ইউনিভার্সিটি।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সারাদিন খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরিপুর ইউনিয়নের প্রায় ১২শ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র, বিনামূল্যে ঔষধ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, কিশোরী মেয়েদের মাঝে স্যানিটারি ন্যাপকিন ও বাচ্চাদের মাঝে চকলেট বিতরণ করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টায় মহেশ্বরিপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর চৌকুনী (বহুমুখী) মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে দক্ষিণ কালিকাপুর, চৌকুনী, কালিকাপুর (পশ্চিম পাড়া) এবং বাবুরা বাধ এলাকার ২৫০ পরিবারের মাঝে শীতের কম্বল, ২০০ জনকে শীতের সোয়েটার, সাড়ে ৩ শ জন মানুষকে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান এবং ১০০ মানুষের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এসময় ১০০ জন কিশোরীকে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হয়। এছাড়া এসব এলাকার ২০০ জন শিশুকে চকলেট দেওয়া হয়। এছাড়া কালিকাপুর চৌকুনী (বহুমূখী) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন তারা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত ১০ বছর ধরে কয়রার মহেশ্বরিপুর ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা কোন ধরনের সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাননি।
তীব্র শীতে কম্বল পেয়ে খুশি মহেশ্বরিপুর ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষরা। এসময় সংগঠনটির কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা।
এছাড়া দুপুর ১২টায় কালিকাপুর চৌকুনী (বহুমূখী) মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এলাকাবাসী ও কিশোরীদের নিয়ে বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতামুলক সেমিনার করেন সংগঠনের সদস্যরা। এসময় তারা বাল্যবিবাহের কুফল ও মেয়েদের পড়াশোনায় উদ্বুদ্ধ করতে এলাকাবাসীকে আহ্বান জানান তারা।
কম্বল পেয়ে নিজের খুশি ব্যক্ত করে বাবুরা বাধ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কালাচান বিবি বলেন, ‘আমার বাড়িত মেলা লোক। রাইতের বেলা ঘুমাতি সমস্যা হয়। শীতে কষ্ট হয়। কয়রাতে তো শীত খুব। কম্বলটা কামে দিবে।’
সংগঠনের সভাপতি মাহামুদুল হাসান মিল্লাত বলেন, ‘শীতে সাধারণ মানুষ যখন কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবণ যাপন করছেন তখন মানবকল্যাণে আমরা এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের সামান্য উদ্যোগের ফলে হয়তো শীতার্ত মানুষের কষ্ট কিছুটা কমবে। ভবিষ্যতে যেকোনো দুঃসময়ে গরিব অসহায় মানুষের পাশে থাকব আমরা। এছাড়া মহেশ্বরিপুর ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের দুর্দশা লাঘবে সমাজের বিত্তবানদের মানবতার হাত বাড়িয়ে দেয়া আহ্বান জানান তিনি।’
বিএসডি/ এলএল