অর্থনীতি ডেস্ক:
চলতি বছরের নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক বৃদ্ধির পরিমাণ সর্বোচ্চ স্তর স্পর্শ করেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক এ নিয়ে টানা চার মাসের মতো বাড়তির দিকে। সম্প্রতি জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনের (এফএও) একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গম ও দুগ্ধজাত খাদ্যের উচ্চ চাহিদার কারণেই বাজারে দাম লাগামহীন। বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করা খাদ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক দামের হিসাব রাখে জাতিসংঘের এ সংস্থা। এফএওর সূচকে নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়ায় ১৩৪ দশমিক ৪ পয়েন্টে। অক্টোবরে এ সূচকের পরিমাণ ছিল ১৩২ দশমিক ৮। এফএওর তথ্য বলছে, ২০১১ সালের জুনের পর চলতি বছরের নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচকের পরিমাণ সর্বোচ্চ পরিমাণ স্পর্শ করেছে। এক দশকে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। গম ও দুগ্ধজাত পণ্যের চাহিদার উল্লম্ফনের কারণেই বাজারে এ চড়া দাম উঠেছে। বাজারে খাদ্যের অপর্যাপ্ত সরবরাহ, পণ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, কারখানা বন্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
এফএও জানায়, এক বছরে খাদ্যশস্যের দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ২ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যের দাম বাড়ায় ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধিকে একটি প্রধান প্রভাবক বলছেন বিশ্লেষকরা। এফএওর সূচক অনুযায়ী পাম ও সয়া তেলের দাম বেড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে।
নভেম্বরে টানা পাঁচ মাসের মতো বেড়েছে গমের দাম। ২০১১ সালের মে মাসের পর থেকে চলতি বছরের নভেম্বরে গমের বৈশ্বিক দাম সর্বোচ্চ পরিমাণ স্পর্শ করেছে। পাশাপাশি এ মাসে ভুট্টার রফতানি মূল্যও কিছুটা বেড়েছে বলে এফএওর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বিপরীতে নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম ব্যাপকভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল বলে জানায় এফএও। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চাল উৎপাদনের অগ্রগতি ও চাহিদার লাগাম টানার ফলে খাদ্যশস্যটির দামে স্থিতাবস্থা বজায় থেকেছে।
এফএওর প্রতিবেদন অনুসারে নভেম্বরে ভোজ্যতেলের মূল্যসূচক ছিল ১৮৪ দশমিক ৬, যা অক্টোবরের তুলনায় দশমিক ৩ পয়েন্ট বা দশমিক ২ শতাংশ কম। এ মাসে সয়া ও র্যাপসিড তেলের দাম কিছুটা কমেছে। এ সময় পাম অয়েলের আন্তর্জাতিক দর বেশ শক্তিশালী অবস্থানে ছিল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নভেম্বরে দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট, যা অক্টোবরের তুলনায় ২০ দশমিক ২ পয়েন্ট বা ১৯ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ মূল্যসূচক প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল। নভেম্বরে মাংসের বৈশ্বিক মূল্যসূচক ছিল ১০৯ দশমিক ৮ পয়েন্ট। অক্টোবরের তুলনায় এটি ১ পয়েন্ট বা দশমিক ৯ শতাংশ কম। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ১৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট বা ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এছাড়া চলতি মাসে চিনির দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চিনির দাম ৪০ শতাংশ বাড়ল।
বিএসডি/ এলএল