খুবি প্রতিনিধি:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। একই ডিসিপ্লিনের তারই এক সহকর্মী শিক্ষিকা এই অভিযোগ তুলেছেন। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ছোটনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পাওয়ার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করছে বলে জানা যায়।
বুধবার বিকেলে অভিযোগকারী শিক্ষিকার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপরপক্ষের শুনানিও খুব দ্রুত অনুষ্ঠিত হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি আরও জানায়, অভিযোগ সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রমাণাদি ইতমধ্যে কমিটির কাছে জমা দেয়া হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি রাতে অভিযুক্ত শিক্ষকের ভাড়া বাসায় ওই নারী শিক্ষিকাকে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করা হয়। পরে ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ব্যাপারটির জন্য ছোটন ওই শিক্ষিকার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ওই সময় ওই নারী শিক্ষিকার ভবিষ্যতে কোনোরকম যোগাযোগ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করে দেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সম্প্রতি ঘটনাটি নিয়ে ছোটন ওই শিক্ষিকার সাথে নানাভাবে যোগাযোগ, কুৎসা রটানো ও হয়রানির চেষ্টা করলে এই মাসের ৪ তারিখে ওই নারী শিক্ষিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটির কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ৪ সেপ্টেম্বর শনিবার বৈঠক করে ব্যাপারটি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটি।
এরপরে ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তদন্তের স্বার্থে ছোটন দেবনাথকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব ধরনের কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি প্রফেসর মোসা. তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘এখনও বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথ বলেন, ‘অভিযোগ বিস্তারিত এখনো আমাকে জানানো হয়নি। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন আছে তাই এ ব্যাপারে আমার এখন মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে তদন্তে আমার পূর্ণ আস্থা আছে, এর মাধ্যমে আসল সত্য বের হয়ে আসবে।’ উল্লেখ্য, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা, ২০০৮ এর ৬.৩ (ঞ) অনুসারে, অপরাধী যদি শিক্ষক হন অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরিচ্যুতি ও রাষ্ট্রীয় আইনের অধীনে যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তরের বিধান রয়েছে।
বিএসডি/এমএম