নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু সদ্য ঘোষিত খুলনা জেলা ও নগর বিএনপির কমিটি প্যারাসুট দিয়ে চাপিয়ে দেওয়া উল্লেখ করে তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ।
তিনি বলেন, বিতর্কিত ও সুবিধাবাদী নেতৃত্ব রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরোধী। নয়া নেতৃত্ব সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে একটি অংশ। যা খুলনার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শনে বিশ্বাসীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। এই কমিটির প্রতি খুলনা বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কোনো সমর্থন নেই, আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় প্রেসক্লাবের নতুন হলে বিএনপি খুলনার ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার নয়া কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর এই প্রথম তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুললেন। নতুন হল নেতাকর্মীতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। তারা বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অনুপ্রাণিত করেন।
মঞ্জু বলেন, আজকের সংবাদ সম্মেলন কর্মী সমাবেশে পরিণত হয়েছে। বিএনপির খুলনার কর্মকাণ্ড সারাদেশে প্রশংসনীয়। নেত্রীর সাথে রোড মার্চ-লংমার্চে গিয়েছি। ত্রাণ বিতরণ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন কোথায় আমরা ছিলাম না ? তাহলে এ আঘাত কেন আমাদের ওপর। মহানগর বিএনপির কাঁধে ভর করে থাকা জেলার নেতৃত্বকে দুই ভাগ করা হয়েছে। একটি ভাগ জেলার নেতৃত্ব দেবেন, আরেকটি ভাগ মহানগরের নেতৃত্ব দেবেন। হতাশাজনক, বেদনার।
তিনি বলেন, এ কমিটিতে বিএনপির সমর্থকদের অসন্মান করা হয়েছে। ১৬ বছরে জেলা পর্যায়ে বিএনপির শক্তিশালী ভীত গড়তে পারেনি তারা নগরের নেতৃত্বে এসেছেন। অনেকে বলে আমাকে না সরাতে পারলে ঘটি ডোবানো সম্ভব নয়। কিন্তু এই মঞ্চে যারা রয়েছে, তাদের মধ্যে কী মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই? এই কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় যারা সুপারিশ করেছেন তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে সত্য গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অযোগ্য নেতৃত্ব চাপিয়ে দিয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মঞ্জু বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত কমিটি দেখে তিনি স্তম্ভিত হয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় কমিটি আশা করেননি। কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ-সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান চঞ্চলের খুনি, মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারীরা। গত ৪ বছরে অঙ্গসংগঠনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা ছিল অসম্পূর্ণ। ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে ছিনতাইকারীরা ছাত্রদলের আহবায়ক হয়েছেন।
মঞ্জু আরও বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম আসলে যেসব নেতৃবৃন্দের জ্বর, সর্দি হয়, ঢাকায় কাজ বাড়ে তাদের দিয়ে এই শহরে আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করা যাবে না। আমরা দাঁড়িয়ে থেকে মোকাবেলা করি, মার খাই। বিতর্কিত নেতৃত্ব দিয়ে খুলনা বিএনপি চলতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা নেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসা চাই, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাতে দেশে এসে পুরোপুরি দলের নেতৃত্ব দিতে পারেন এ জন্য তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, জাইমা রহমানের বিরুদ্ধে যে বিষেদাগার সরকারের একজন পতিত মন্ত্রী করেছেন তার নিন্দা জানাচ্ছি। শহিদ জিয়ার পরিবার শুধু জিয়া পরিবার নয়, জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আবেগের প্রতীক। আমাদের আবেগের প্রতীক। সেই জিয়া পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিষেদাগার বন্ধ করুন এবং যিনি করেছেন তার বিচার দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মো. মনিরুজ্জামান মনি, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, নগর কমিটির সাবেক উপদেষ্টা জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল খান কালাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান অপু, দৌলতপুর থানা শাখা কমিটির সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন, খালিশপুর থানার ফজলে হালিম লিটন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম নান্নু, খানজাহান আলী থানা শাখার সভাপতি মীর কায়সেদ আলী, জেলা জাতীয়তাবাদি আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি এম বজলুর রহমান, এস আর ফারুক ও গোলাম মাওলা প্রমূখ। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসডি/ এসএ