নিজস্ব প্রতিবেদক,
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গণপরিবহনে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের প্রধানসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ৮টার পর থেকে ভোলাহাট থানা ও ডিবি পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত পুলিশের কয়েকটি টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।
আটকরা হলেন- ডাকাত দলের মূল হোতা শিবগঞ্জ উপজেলার বালিয়াদীঘি মধ্যবাজার গ্রামের মো. ভল্লুর ছেলে মো. রেজাউল করিম (৪০), একই গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে মো.আনারুল ইসলাম ওরফে আনুগুরু (৪৫) ও শাহবাজপুর ইউনিয়নের শান্তির মোড়-হামিদ নগর এলাকার মো. মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে তাজেল আলী (৩৫)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এএইচএম আব্দুর রকিব বলেন, সোমবার রাত ৮টার দিকে ডাকাতির ঘটনার পর থেকেই ডাকাত সদস্যদের আটক ও মালামাল উদ্ধার করতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। ডাকাতির ঘটনায় ১৫-১৬ জন ডাকাত সদস্য অংশ নিলেও রাত-দিনের অভিযানে পুলিশ মূলহোতাসহ তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং পুলিশকে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রথমে একটি মোটরসাইকেল আটকে তার কাছে কিছু না পেয়ে মোটরসাইকেল দিয়েই রাস্তায় ব্যারিকেট দেয় ডাকাত সদস্যরা। পরে ভোলাহাট থেকে ঢাকাগামী তিনটি বাসে ডাকাতি করে তারা। ডাকাতরা লাঠি ও হাতুড় দিয়ে ঢাকা কোচের সামনের অংশ ভাঙচুর করে ভেতরে ঢুকে যাত্রীদের পিটিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাই করে। শেষের বাসটিতে সম্পূর্ণ ছিনতাই করার আগেই ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। তবে পেছনে আটকে থাকা ৩০-৩২টি পরিবহনে ডাকাতি হয়নি।
জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, আটকদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ১২টি মোবাইল ফোন, কয়েকটি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাঁসুয়া, হাতুড়ি, রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত সদস্যরা জানায়, তারা নগদ ৯৫ হাজার টাকা ছিনতাই করেছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র্যাবের হাতে আটক হওয়া চারজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের থেকেও ডাকাতির ঘটনায় জড়িত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আটক ডাকাত সদস্যরা প্রায় সব কিছুই স্বীকার করেছে। তারপরও অধিক তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে ভাবা হবে।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতির ঘটনায় দুইজন মূল হোতা নেতৃত্ব দেয়। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে আটক আনোয়ার। বাকি আরেক হোতা ও অন্যদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাহবুব আলম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ফজল-ই-খুদা, ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাববুবুর রহমান, গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল উদ্দীন সরদারসহ অন্যান্যরা।
বিএসডি/আইপি