বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কোনো নারী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) না রাখার সুপারিশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে।
সংসদীয় কমিটির এমন সিদ্ধান্ত নারীর জন্য অবমাননাকর এবং সরকারের নীতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
সংসদে শিরীন আখতার বলেন, ‘আমি বিস্মিত, হতবাক, ব্যথিত। এমন বিষয় আমার সহকর্মীরা উত্থাপন করতে পেরেছে! সংবিধানে বলা আছে, নারী-পুরুষে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। সেই দেশে যখন এই ঘটনা ঘটে, তখন আমরা স্তব্ধ হয়ে যাই।’
শিরীন আখতার বলেন, সংসদীয় কমিটিতে যুক্তি এসেছে, নারী যেহেতু জানাজায় অংশ নিতে পারেন না, সে জন্য গার্ড অব অনারে নারী যাতে না থাকেন। জানাজা ও গার্ড অব অনার এক নয়।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যখন দেশজুড়ে মৌলবাদের আস্ফালন দেখা যাচ্ছে, তখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছ থেকে এমন সুপারিশ এসেছে। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন, যাতে এ রকম কলুষিত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশের তীব্র সমালোচনা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে তারা এই সুপারিশকে নারীবিদ্বেষী ও বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেছে। একই সঙ্গে এ ধরনের সুপারিশকে দেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বলে অভিহিত করেছে। যাঁরা এ সুপারিশ করেছেন, তাঁদের শাস্তিরও দাবি উঠেছে।
জাসদ সভাপতি সাংসদ হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার গতকাল এক বিবৃতিতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এ সুপারিশ সংবিধানবিরোধী, চরম নারীবিদ্বেষী ও বৈষম্যমূলক।’