নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাদারীপুরের রাজৈরে এক গৃহবধূকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সোমবার এ অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূর স্বামী আমিনুল ইসলাম।
রাজৈর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতব্বরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। বিষয়টির আদ্যোপান্ত তুলে ধরে বিদ্যালয়ের সভাপতি মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি রাজৈর, জেলা ও উপজেলা জেলা সাংবাদিকসহ ১১ দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন গৃহবধূর স্বামী।
এ বিষয় অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতব্বর বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে মীমাংসার কথা চলছে।
আমিনুল ইসলামের অভিযোগ, জৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের গিয়াসউদ্দিন মোল্যার ছেলে আমিনুল ইসলাম চাকরির সুবাদে তার স্ত্রী, ১০ বছরের কন্যা, বৃদ্ধ বাবা ও মাকে নিয়ে রাজৈর বেপারিপাড়া হাজি সিদ্দিক বেপারির বাসায় ভাড়া থাকেন। একই ফ্লাটে পাশাপাশি থাকেন ভাড়াটিয়া রাজৈর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর আলম মাতব্বর।
আমিনুল ইসলাম তার পরিবারের লোকজন বাসায় রেখে দূরে থাকার কারণে তার স্ত্রীকে শিক্ষক নুর আলম মাতব্বর বিভিন্ন প্রলোভন এবং ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি করার কথা বলে প্রাইভেট পড়াতে শুরু করেন। প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে শিক্ষক নুর আলম তার স্ত্রীকে অনৈতিক কার্যকলাপ করার প্রস্তাব দেয়। এতে আমিনুল ইসলামের স্ত্রী ওই শিক্ষকের আচরণে বাধা দিলে নুর আলম বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। আমিনুল ইসলামের বৃদ্ধ মা-বাবার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ার সুযোগে তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানি করে। প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে নিয়মিত মোবাইলে সেলফি তোলা, মোবাইলে কথা বলা, রাতে অহেতুক মানসিক যন্ত্রণা, জোরপূর্বক শারীরিকভাবে একাধিকবার অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করেন।
স্থানী সূত্রে জানা যায়, একটি বালিকা বিদ্যালয়ের মতো সংবেদনশীল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নারীঘটিত কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটালে ছাত্রীদের মনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী শিক্ষক নুর আলমের স্ত্রীকে এ ব্যাপারে বারবার জানিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে আমাকে জানাতে বাধ্য হয়। পরে আমি এ বিষয় নুর আলমকে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি বাধ্য হয়ে বাসা পরিবর্তন করে থানার মোড়ে বাসা ভাড়া নিয়ে চলে যাই। সেখানেও সে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। পরে আমি আমার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি শাখারপাড় চলে যাই । আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, আমি এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহোদয়েও রেজিস্টারি ডাকে অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, জেলা প্রশাসক বরাবরে লেখা অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদারীপুর জেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, সত্য না হলে কেউ নিজের স্ত্রী সম্পর্কে এ ধরনের অভিযাগ পাঠাতে পারেন না।
বিএসডি/ এলএল