ধর্ম ডেস্ক,
বাংলাদেশে ‘নির্দিষ্ট কিছু’ চাকরিতে যোগ দিতে হলে ঘুষ দিতে হয়। সেখানে ঘুষের আদান-প্রদানের বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট। কিন্তু ঘুষ দেওয়া ও ঘুষ দিয়ে চাকরি করা কি জায়েজ? এই বিষয়ে ইসলাম কী বলে?
এর উত্তর হলো- বাধ্য হয়ে ঘুষ দেওয়া জায়েজ আছে। কিন্তু ঘুষ নেওয়া কখনোই জায়েজ নয়। আর ঘুষ দিয়ে চাকরি অর্জনকারীর উপার্জন বৈধ হওয়ার জন্য অবশ্যই কয়েকটি শর্ত-কারণ পাওয়া যেতে হবে। যেমন- ০১. ঘুষ দিয়ে উক্ত কাজ করা ছাড়া অন্য কোনো কাজ করার সুযোগ না থাকে। ০২. যথার্থ ও সঠিকভাবে উক্ত কাজ করার যোগ্যতা ও মানসিকতা থাকে। ০৩. মূল বিলের চেয়ে বেশি বিল কর্মস্থলের তহবিল থেকে গ্রহণ না করা হয়।
উপরোক্ত শর্তসাপেক্ষে বাধ্য হয়ে— ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে কাজ নিয়ে সঠিকভাবে তা সম্পন্ন করলে, তখন ঘুষ দেওয়া জায়েজ হতে পারে এবং সেই উপার্জন হালাল হবে।
মনে রাখা জরুরি যে, যারা ঘুষ নিচ্ছেন— তারা হারাম কাজ করছেন। কিন্তু যারা বাধ্য হয়ে দিচ্ছেন, তাদের উপার্জন হারাম বলা যাবে না। কিন্তু ঘুষ ছাড়া অন্য কোনো কাজ করার সুযোগ যদি থাকে কিংবা যোগ্যতা না থাকলে ও যথার্থভাবে কাজ আঞ্জাম না দিলে; অথবা মিথ্যা বিল লেখার যদি চুক্তি করা হয়— তাহলে উক্ত কাজ ও সেই উপার্জন হালাল হবে না।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশে শাসক কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৮)
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৬১)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ২৩১৪৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৪; সুনানে দারেমি, হাদিস : ২৫৮৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২২৫; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৯০৫)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুল বলেছেন- ঘুষদাতা ও ঘুষ গ্রহীতার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-২৩১৩, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৩৫৮০, সুনানে তিরমিজী, হাদিস নং-১৩৩৬)
তথ্যসূত্র : রাদ্দুল মুহতার : ০৮/৩৪; ইলাউস সুনান : ১৫/৬১; রাদ্দুল মুহতার : ০৯/৬০৭; ফাতহুল কাদির : ০৭/২৫৫; আল-বাহরুর রায়েক : ০৬/২৬২)
বিএসডি/এএ