নিজস্ব প্রতিবেদক,
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা এলাকায় হত্যা মামলায় নিজের পরিবর্তে মিনু পাগলি নামে নিরাপরাধ এক নারীকে জেল খাটানো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কুলসুম আক্তার প্রকাশ কুলসুমীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনায় কুলসুমীর সহযোগী মর্জিনা আক্তার নামে অপর এক নারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ২০০৬ সালের ২৯ মে কোতোয়ালী থানাধীন রহমতগঞ্জ ৮১নং গলির সাইদ সওদাগরের ভাড়া ঘরে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস কর্মী পারভিনকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। পরে রহমতগঞ্জে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় লাশ।
ঘটনার পর পারভিন আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন গার্মেন্টস কর্মী কুলসুম আক্তার কুলসুমী। উক্ত ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হলেও মামলার তদন্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রতীয়মান হওয়ায় ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
উক্ত মামলায় ২ বছর তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। কুলসুমা আক্তার কুলসুমী উক্ত মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ২ বছর কারাভোগ করে জামিন লাভ করে।
মামলায় সাজার বিষয়টি জানতে পেরে মর্জিনা আক্তারসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের একটি চক্রের মাধ্যমে নিরপরাধ মিনু প্রকাশ মিনু পাগলি নামক এক নিরাপরাধ নারীকে কুলসুমা আক্তার কুলসুমী সাজিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ২০১৮ সালের ১২ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করায়। বিনা অপরাধে মিনু চলতি বছরের ১৬ জুন পর্যন্ত হাজতবাস করেন।
বিষয়টি চট্টগ্রাম আদালতের অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদের নজরে এলে তিনি হাইকোর্টে এ বিষয়ে আপিল করেন। হাইকোর্ট বিভাগ মিনু বেগমকে জামিনে মুক্ত দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, চতুর্থ আদালত আদেশ সহকারে আসামি কুলসুমা আক্তার কুলসুমীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) হত্যা মামলায় পুলিশ প্রকৃত আসামি কুলসুমীকে গ্রেপ্তার করে।
বিএসডি/আইপি