নিজস্ব প্রতিবেদক
জামায়াতে ইসলামী কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, দখলবাজদের সঙ্গে জোট করবে না বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
তিনি বলেন, জামায়াত জোট করবে সৎ, দক্ষ, যোগ্য, নৈতিক ও আদর্শবান নেতৃত্বের সঙ্গে। জামায়াতের লক্ষ্যই হচ্ছে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নৈতিক ও আদর্শবান নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতিকে একটি নিরাপদ বাসযোগ্য কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দেওয়া।
১৯ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে ডেমরা অঞ্চল কর্তৃক আয়োজিত প্রচারাভিযানের মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যারা দল পরিচালনায় ব্যর্থ, তারা দেশ পরিচালনায়ও ব্যর্থ। যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই দলের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে জাতি সেটি জানে। যে দলের এক নেতা আরেক নেতার কাছে নিরাপদ নয়, এক কর্মী আরেক কর্মীর কাছে নিরাপদ নয়, সেই দলের কাছে দেশ ও জাতি কখনোই নিরাপদে থাকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী জাহেলি যুগের অবসান ঘটার পর এখন কারা প্রতিদিন মানুষ হত্যা করছে, কারা খুনাখুনি করছে, কারা চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, দখলবাজি, টেন্ডরাবাজি করছে এর জবাব রাজনৈতিক দলগুলোকেই জাতির সামনে দিতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি বলেন, মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডের মতো হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থান অর্জন করেনি। যেখানে দেখা গেছে চাঁদা তোলা নিয়ে, চাঁদা দাবি নিয়ে একটি দলের দুই গ্রুপের নৃশংসতায় এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। সেখানে যুবদলের এক নেতা তাদেরই আরেক গ্রুপের সদস্যকে পাথর দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে থেঁতলে লাশ নিয়ে নৃত্য করেছেন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ লগি-বইঠা দিয়ে যেভাবে মানুষকে পিটিয়ে-পিটিয়ে হত্যা করেছে তার চেয়েও ভয়ংকরভাবে তারা এখন মানুষ হত্যা শুরু করেছে। সারা দেশে তারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ এর জবাব দিবে।
তিনি বলেন, তারা নির্বাচনের জন্য হতাশ। অথচ নির্বাচনের নূন্যতম কোনো পরিবেশ নেই। জামায়াত বলেছে, নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে তবে তার আগে সব গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। তবেই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রতীক, দলের নিবন্ধন কিংবা দলের শীর্ষ নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে সভা-সমাবেশ করতে পারলেও করেনি। কারণ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করেছে। জনগণের দাবি আদায়ে জামায়াতে ইসলামী বরাবরই আপোষহীন। তাই জনগণের প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে ৭ দফা দাবি বাস্তবায়িত করতেই হবে। ৭ দফা দাবি আদায়ে আসন্ন ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশে স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাবেশ সফল করতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ডেমরা জোনের পরিচালক অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহানগর সহকারী সেক্রেটারি ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- ডেমরা মধ্য থানা আমির ও ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী, ডেমরা দক্ষিণ থানা আমীর ও ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদপ্রার্থী মেছবাহ উদ্দীন মীর্জা হেলাল, ডেমরা পূর্ব থানা সেক্রেটারি ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার তমিজ উদদীন সোহরাওয়ার্দী, ডেমরা পশ্চিম থানা সেক্রেটারি ও ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হাফেজ ইসমাইল আদনান, ডেমরা পশ্চিম থানা সেক্রেটারি ও ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার কামারাম মুনীর ফুয়াদ।