ডেস্ক রিপোর্ট:
আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা’ আদর্শলিপির এই ছড়া ছোটবেলায় শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। শুধু কি তাই, দূর আকাশে জোছনা বিলানো চাঁদের সঙ্গে কল্পনার কথোপকথনে লেখা হয়েছে শত সহস্র গল্প, গদ্য, উপন্যাস, কবিতাসহ আরও কত কী। তবে এবার আর অধরা থাকছে না চিরচেনা সেই চাঁদ। পৃথিবীতে দেখা মিলেছে এক বিক্রেতার, যিনি ফেরি করে বিক্রি করছেন চাঁদের বিভিন্ন অংশ।
৫ দশক আগে চাঁদের বুকে পদচিহ্ন রেখে ইতিহাসের অংশ হয়েছেন নিল আর্মস্ট্রং ও বাজ অলড্রিন। সম্প্রতি চাঁদে জমি কেনার হিড়িক পড়েছে দেশেও। গেল বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খুলনার এমডি অসীম নামের একজন তার ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রী ইসরাত টুম্পাকে চাঁদে জমি কিনে দিয়েছেন। এই খবর রীতিমতো ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। হচ্ছে ট্রোল, সৃষ্টি হয়েছে হাস্যরসের। এর আগেও সাতক্ষীরা জেলার দুই তরুণ চাঁদে জমি কিনে উঠে আসেন খবরের শিরোনামে।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবছেন চাঁদে একখণ্ড জমি কিনে রাখলে মন্দ হয় না! তাহলে পরের লাইনগুলো আপনার জন্য। প্রথমেই আপনাকে ডেনিস হোপের ওয়েবসাইট লুনার অ্যাম্বাসি ডট কমে যেতে হবে। শুধু চাঁদ নয়, পৃথিবী ও সূর্য বাদে মঙ্গল, বৃহস্পতিসহ সৌরমণ্ডলের অন্য যেকোনো গ্রহের জমি কিনতে পারবেন এই ওয়েবসাইট থেকে।
আপনাকে ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরপর অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া শেষে আপনাকে চাঁদের যে অংশটি আপনি কিনলেন তার একটি স্যাটেলাইট ম্যাপ এবং জমি কেনার আইনি কাগজপত্র দেয়া হবে মেইলের মাধ্যমে।
শুধু তাই নয়, চাঁদে প্রথম মানব অভিযান অ্যাপোলো ১১ যেখানে ল্যান্ড করেছিল সে স্থানটি কিনতে পারতেন আপনি। তবে হতাশার কথা হলো, সেই স্থানটি আগেই বিক্রি হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে।
এখন প্রশ্ন, সৌরজগতের সব গ্রহের জমির দাবিদার কে এই ডেনিস হোপ? আদৌ চাঁদ বা অন্য কোনও গ্রহে কি এভাবে জমি কেনা সম্ভব?
যতদূর জানা যায়, ডেনিস হোপ হলেন একজন মার্কিন নাগরিক। ১৯৮০ সাল থেকেই তিনি দাবি করে আসছেন, সৌরমণ্ডলের সব গ্রহের মালিক তিনি।
কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে, জাতিসংঘের ‘আউটার স্পেস ট্রিটি’ চুক্তি অনুযায়ী, চাঁদে কেউ জমি কিনতে পারে না। তবে কিছু দেশের নাগরিক আইন বা চুক্তির ফাঁকফোকর বের করে চাঁদ এবং অন্যান্য গ্রহ–উপগ্রহে জমি বিক্রির নাম করে পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। যারা কিনছেন, তারা আসলে চাঁদে জমি কিনছেন, না তৃপ্তির ঢেকুর কিনছেন!
বিএসডি/আইপি