নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য সঠিক পদ্ধতিতে চামড়া সংরক্ষণে বিনামূল্যে লবন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম।
তিনি বলেন, ঈদের ১০ দিন পর্যন্ত ময়মনসিংহ থেকে কোনো কাঁচা চামড়া বাইরে নেওয়া যাবে না। লিল্লাহ বোর্ডিংসহ নির্ধারিত কেন্দ্রে চামড়া দেওয়ার আগাম তথ্য দিলে চামড়া সংরক্ষণে দেওয়া হবে বিনামূল্যে লবণ। আসন্ন ঈদে দরিদ্র কোরবানিদাতাদের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রাখা হয়েছে বলেও জানান ডিসি।
বুধবার (২৮ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঈদ প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় পশুচামড়া সংরক্ষণ, লবণের যোগান, হাট ব্যবস্থাপনা, কোরবানির পশু পরিবহন, পশুস্বাস্থ্য, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তাসহ ঈদকেন্দ্রিক সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া ঈদকেন্দ্রিক দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য হাইওয়ে পুলিশকে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোর তালিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন ডিসি।
এ সময় প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, কোরবানির হাটে পশুস্বাস্থ্য রক্ষায় জেলায় ৫২টি মেডিকেল টিম কাজ করবে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীতে থাকবে ১০টি টিম। তারা নির্দিষ্ট পোশাকে কাজ করবে। জেলার অন্যান্য উপজেলাসমূহের প্রশাসনের কাছে এই টিমের তালিকা পাঠানো হবে। সঠিক পদ্ধতিতে চামড়া ছাড়াতে ময়মনসিংহ জেলার কসাইদের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবারের ঈদে ময়মনসিংহ জেলায় ১৬৯টির অধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানি পশুর হাট রয়েছে জানিয়ে এই সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়। এগুলো হল- নগরীর মাসকান্দাসহ ৫টি স্পটে গরুর হাট করা যাবে না। রাস্তার ওপর কোরবানির হাট বসানো যাবে না। হাটগুলোতে জালনোট ঠেকাতে ডিটেক্টর রাখতে হবে। চাঁদাবাজি ঠেকাতে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। ঈদের আগেই শিল্প-শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে। বিটিআরসির ঈদ স্পেশাল বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। ঈদ উপলক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এম.এম মোহাইমেনুর রশিদ, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহেদুল আলমসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ এবং বোর্ডিং পরিচালনাকারীদের সমন্বয়ে চামড়া সংরক্ষণের এ উদ্যোগে খুশি এলাকার ব্যবসায়ী ও নেতারা।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহেদুল আলম বলেন, শুধু লিল্লাহ বোর্ডিং নয়, জেলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতেও এই সহায়তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে যেমন চামড়া ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন, তেমনি অপচয় রোধে দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে।