নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভরা মৌসুমেও চালের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রভাব থেকে মুক্তি মিলছে না কিছুতেই। এদিকে সয়াবিন তেলের নতুন বাড়তি দাম নির্ধারণ হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে তেলের খুচরা দামে।
রাজধানীতে চালের দাম কেজিপ্রতি তিন থেকে চার টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৮ টাকা।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগ, কারওয়ান বাজার, মধুবাগ ও রামপুরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা কেজিতে, মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬০ টাকা কেজিতে। আর ভালো মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকা কেজিতে।
বাজারে পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫২ টাকা। এক সময়ে গুটি স্বর্ণা ৪৫ টাকা কেজি পাওয়া গেলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকায়। কেজিপ্রতি চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩-৪ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৬৭ টাকা কেজি। ২৮-বালাম বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৫ টাকায় আর নাজির শাইল ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে।
এ বিষয়ে মধুবাগ বাজারের চাল বিক্রেতা মাহবুব হোসেন বলেন, মোকামে দাম বেশি তাই খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েছে। সাথে যোগ হয়েছে ট্রাকের ভাড়া বৃদ্ধি। পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চালের খুচরা বাজারে। চালের দাম কমার কোনো লক্ষ্মণ দেখছি না। নানা অজুহাতের দাম বেড়েই চলেছে। আমরা ব্যবসায়ীরাও বিরক্ত।
অন্যদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬০ টাকা থেকে ১৬৮ করার পর পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৩০-৮৫০ টাকায়। কারও আগের ক্রয় করার থাকলে কিছুটা কম দামে বিক্রি করছেন।
গত ৫ জানুয়ারি সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ থেকে ১৬৮ টাকা লিটার করা হয়। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবির মুখে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সমিতি বলেছে, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর থেকে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াতে চেয়েছিল তারা। সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে দাম বাড়ানো থেকে রিফাইনাররা বিরত ছিল। তবে আমদানি ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান দাম বজায় রাখা সম্ভব নয় বলে তাদের সর্বশেষ চিঠিতে বলা হয়েছে। গত নভেম্বরে রিফাইনাররা প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে থেকে ১৭২ টাকা করতে চেয়েছিল। কিন্তু এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠিতে সমিতি ৪ টাকা কমে অর্থাৎ প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়ানোর কথা বলে। গত বছরের মে মাসের পর এবার দিয়ে চতুর্থবারের মতো দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসে।
সয়াবিন তেলের পাশাপাশি বাজারে প্যাকেটজাত আটার দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা। টিসিবির হিসেবে, প্যাকেটজাত আটার দাম ৪০-৪৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকা কেজিতে। বাস্তবে খুচরা মূল্য আরও বেশি।
ডালের মধ্যে বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা কেজি। আর মাঝারি দানার মসুর ডাল কেজিপ্রতি ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকায়। ছোট দানার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা কেজি।
রামপুরার উলোন রোডের বাসিন্দা আবুল হোসেন আক্ষেপ করে বললেন, দফায় দফায় দাম বাড়লেও বেতন তো বাড়ে না। এই বাজারে ছেলে-মেয়ে নিয়ে কিভাবে জীবনযাপন করব আল্লাহই ভালো জানে।
বিএসডি/ এলএল