নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দক্ষিণ কাইচ্ছুটি আইডিয়াল হাই স্কুলে তালা ঝুলিয়েছে মালিকপক্ষ। এতে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বিরোধ নিরসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে শনিবার দুপুরে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এর আগে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলানোর অভিযোগে জায়গার মালিক মৌলভী নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে এয়াছিনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম। জানা গেছে, উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাইচ্ছুটি ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় শিক্ষার হার খুবই কম। সীমান্তবর্তী মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে হাজী মোঃ শাহ আলম একই গ্রামের মৌলভী নুরুল ইসলামের জায়গায় ২০১১ সালে ১০ বছর চুক্তিতে অস্থায়ী একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ‘দক্ষিণ কাইচ্ছুটি আইডিয়াল হাই স্কুল’ নামে প্রতিষ্ঠান চালু করে। ওই প্রতিষ্ঠানে প্রায় একশত শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কুচক্রী মহলের ইন্ধনে জায়গার মালিক মৌলভী নুরুল ইসলাম জায়গাটি ছেড়ে দেয়ার জন্য উকিল নোটিশ ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। নির্দিষ্ট সময়ে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে-এমন সিদ্ধান্তে স্কুল কর্তৃপক্ষ জায়গার মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করতে ব্যর্থ হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করা হয়। মালিক মৌলভী নুরুল ইসলাম কারো কথার তোয়াক্কা না করেই চলতি বছরের ২ জানুয়ারি উকিল নোটিশ প্রদান করে। আইনিভাবে সে নোটিশের জবাব দিলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে ২৮ জানুয়ারি মালিক নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে এয়াছিনের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা স্কুলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এ সময় হামলাকারীরা নতুন জায়গা খরিদ করার জন্য রাখা ৫ লাখ ৭০ হাজার ৩’শ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। ঘটনাটি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করে ২৩ ফেব্রুয়ারি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম। এদিকে শনিবার স্কুল খুলে দেয়ার দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক, অভিভাবক জাহানারা বেগম, ফাতেমা বেগম প্রমুখ। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ কাইচ্ছুটি আইডিয়াল হাই স্কুলের জায়গার মালিক মৌলভী নুরুল ইসলামের ছেলে এয়াছিন বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ। আমার বাড়িতে নতুন ঘর নির্মাণে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় নতুন স্কুল কর্তৃপক্ষকে আর বাড়তি সময় দেয়া যাচ্ছে না। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম মানববন্ধনে বক্তব্যে বলেন, ‘চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে আমরা চলে যাব। কিন্তু আমাদেরকে মালিকপক্ষ না জানিয়ে স্কুলের আসবাবপত্র ভাংচুর, টাকা লুট করে শ্রেণীকক্ষে তালা মেরে রাতের অন্ধকারে স্কুল আঙিনায় কলার চারা রোপন করে। আমরা বিদ্যালয়টির জন্য নতুন জায়গা ক্রয় করেছি। নতুন ঘর নির্মাণেরও সময় দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। কিন্তু আমি এখন প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে কোথায় যাব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক বলেন, ‘সাংবাদিকের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। খবর নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করব’।
বিএসডি/ এফএস