নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ওমরায় লোক পাঠানো কেন্দ্র করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লোগো থাকা একটি গাড়িতে করে মোহাম্মাদ ইমাম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তাকে অপরহণ করা হয়। এসময় আবাবিল হজ গ্রুপের মুয়াল্লিম আলামিন ও তার সহযোগী মাওলানা ইমদাদ দীর্ঘ সময় আটক ও শারীরিক নির্যাতনের পর তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।
ভুক্তভোগী মোহাম্মাদ ইমাম উদ্দিন জানান, আবাবিল হজ গ্রুপের মুয়াল্লিম আলামিন নামে এক ব্যক্তি ২০১৯-২০২০ সালের হজ ও ওমরা পালনকারী যাত্রীদের দায়িত্ব পালন করার সময় ময়মনসিংহের নান্দাইলে আসাদুজ্জামান নামে একটি লোকের সাথে হজে লোক পাঠানো নিয়ে চুক্তিভিত্তিক প্রায় নয় লক্ষ টাকা আর্থিক লেনদেন করে। সেখানে আবাবিল হজ গ্রুপের মুয়াল্লিম আলামিন এবং নান্দাইলে আসাদুজ্জামাণ আমার পরিচিত থাকায় আমার সামনেই এই লেনদেনের কিছু অংশ সম্পন্ন হয়। এই লেনদেনের শর্ত অনুযায়ী কয়েকজন হাজীকে পাঠানোর চুক্তি হয় আলামিন এবং আসাদুজ্জামানের মাঝে। আমার সামনে কিছু লেনদেন হবার কারণে আলামিন আমাকে উভয়ের মাঝে সমন্বয়কারী হিসেবে মনে করে। কিন্তু তাদের এ লেনদেনের কোন সাক্ষী বা সমন্বয়কারী আমি নই। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আসাদ সেসব হাজীকে ওমরাতে নিতে পারেনি। একইসাথে টাকাও ফেরত দেয়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসাদকে না পাওয়ায় আলামিন আমাকে অপহরণ করে। আলামিন দাবি করে এই টাকা আমাকে দিতে হবে। এর আগে আসাদকে না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মামলাও করে আলামিন। সে মামলায় এখন আমি জামিনে আছি। নিয়মিত হাজিরাও দিচ্ছি। এর মাঝে কোন আকস্মিকভাবে আমাকে পুরানা পল্টন এলাকা থেকে কিছু বিপথগামী ছেলে দিয়ে অপহরণ করে আলামিন।
অপহরণের পর আমাকে পল্টন টাওয়ারের সুলতান এয়ার এভিয়েশনে বন্দী করে রাখে। সেখানে আমাকে প্রথমে টাকা দেবার জন্য অকথ্য ভাষায় গালি দেয় এবং মারধর করা হয়। যেহেতু আমার সাথে টাকা ছিলোনা সেহেতু বিকাল তিনটা থেকে রাত আট টা অবধি পল্টন টাওয়ারে আটক রাখা হয়। এক পর্যায়ে পল্টন টাওয়ারের অফিস বন্ধ হয়ে গেলে আমাকে পল্টন সাব্বির টাওয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও রাত দশটা অবধি আঁটকে রাখা হয়। এরমাঝে আমার দুইটি ফোনই তারা নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, কারো সাথে যোগাযোগ করার উপায় না থাকায় এ বিষয়ে আমিও আমার পরিবারকে জানাতে পারিনি। এক পর্যায়ে তারা আমাকে ফোন দিলে আমি আমার স্ত্রীকে কল করে পল্টন টাওয়ারে আসতে বলি। আমার স্ত্রী সেখানে আসতে চাইলে তারা আমাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ চলে যায়। সেখানেও আঁটকে রাখা হয়। মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তারা পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। এর মাঝে আমার স্ত্রী আমাকে না পেয়ে আমার পরিচিতদের বিষয়টি জানান। চারপাশ থেকে আমার পরিচিতজনরাও আমাকে উদ্ধারের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বুঝতে পেরে তারা রাত দুইটায় আমার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে আমার পরিবারকে নানা হুমকি দেয়া হয়।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যে গাড়িতে আআমকে অপরহরন করা হয় আমাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় আমার স্ত্রী সেই গাড়ির ছবি তুলে রাখেন। গাড়িটির নাম্বার ”ফেনী-খ- ০৫-০০০১”।
এ বিষয়ে আলামিনকে কল করে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
বিএসডি/ এমআর