কৃষি ডেস্ক,
যশোরের এই উপজেলার তিলকপুর গ্রামের এনামুল হোসেনের ছোট বেলার শখ ছিল কৃষির উপর ব্যতিক্রম কিছু করা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের মতো করে কিছু করার স্বপ্ন তার, চাকরি ছেড়ে থাই পেয়ারা, আপেল ও বাও কূলের বাগান করেন। ইন্টারনেটে ড্রাগন ফল চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তারা ইসমাইল হোসেনের সাফল্যও তাকে উৎসাহিত করে।
চৌগাছা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে এই ফলের চাষ প্রথম শুরু করেন ইসমাইল হোসেন। তার সাফল্য দেখে আরো অনেকেই ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। চাষিরা জানান, ইতিমধ্যেই চৌগাছায় ড্রাগন চাষ শতবিঘা ছাড়িয়েছে।
এনামুল ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারা এনে দুই বিঘা জমিতে রোপন করেন। তিনি বলেন, একটানা বছরের ৭ মাস এই ফল পাওয়া যায়। একবার চারা লাগালে ৩০ থেকে ৪০ বছর ফল হয়। ফলে কাঙ্খিত পরিমাণে লাভবান হওয়া সম্ভব। বাজারে ড্রাগন ফলের প্রচুর চাহিদা, প্রতি কেজি ড্রাগন গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। বছরে প্রতি একর বাগান থেকে প্রথম পর্যায়ে ৬/৭ লাখ টাকার ফল বিক্রি করা সম্ভব। এছাড়া চারা বিক্রি করে আরো কয়েক লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
কৃষক হেলাল উদ্দিন বলেন, বিদেশ থেকে বাড়ি এসে কী করবো চিন্তায় ছিলাম। এ সময় ড্রাগন চাষের কথা মাথায় আসে। আমি ৯ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করি। বাগানের বয়স ১ বছর হয়েছে। ফলও আসতে শুরু করেছে। অল্প কিছু ফল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।
চাষিরা জানান, এ ফল চাষ করার জন্য শুধু জৈব সারই যথেষ্ট। অতিরিক্ত অন্য কোনো সার বা কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও ফল বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলকা থেকে খরিদ্দাররা বাগানে এসে কিনে নেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন বলেন, চৌগাছায় ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী। উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান রয়েছে। জমি থেকে ড্রাগন ফল সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু করেছেন চাষিরা। মিষ্টি ও হালকা টক জাতীয় স্বাদের নানা পুষ্টিগুণে ভরা ড্রাগন ফল চাষ লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করার জন্য আমরা চাষিদের উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করছি।
বিএসডি/এএ