স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জলবায়ু অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য বিশ্ব নেতাদের সাহসী এবং দৃঢ় যৌথ পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় পিফোরজি (P4G) সামিটে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
“টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বৈশ্বিক নেতৃত্ব” শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে বক্তৃতাকালে মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব। তিনি একটি সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব এবং সংহতি জোরদার করার উপর গুরুত্ব দেন যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তার বক্তৃতায় আগামী দিনেও পিফোরজি এর সাথে কাজ চালিয়ে যেতে বাংলাদেশের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অনুকরণীয় আর্থ-সামাজিক অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলায় স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত জলবায়ু অভিযোজন সমাধান ভাগাভাগি ও অগ্রসর করার ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন।
এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ২০০৯ সালে “জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল” প্রতিষ্ঠা করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নিজস্ব সম্পদ থেকে প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। সবুজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ ব-দ্বীপের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী “বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ সম্পর্কেও উল্লেখ করেন। তিনি যুব উদ্যোক্তাদের সমর্থনে স্টার্টআপ ব্যবসার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত প্রণোদনার কথাও তুলে ধরেন।
পরবর্তীতে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম কলম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলভারো লেইভা এবং ডেনমার্কের উন্নয়ন নীতি বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ওলে থঙ্কের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
কলম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, এমন অনেক খাত রয়েছে যেখানে দুই দেশ সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে, অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে এবং একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারে। কলম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের চমৎকার অর্জনের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কলম্বিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারে। উভয় মন্ত্রী কীভাবে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্তরকে শক্তিশালী ও আরো উন্নত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং ডেনিশ ভাইস মিনিস্টার পিফোরজি-এর পাঁচটি ফোকাস এলাকায় কাজ করতে সম্মত হয়েছেন যাতে যুবকদের সহযোগিতা এবং তাদের জন্য উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ তৈরি করা যায়। তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে আরও সহযোগিতার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম তৃতীয় পিফোরজি সামিটে যোগ দিতে দুই দিনের সরকারি সফরে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় রয়েছেন। পিফোরজি হল একটি বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্ম যা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি পূরণের জন্য আরও উন্নত এবং সবুজ পৃথিবীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বাস্তব সমাধানের জন্য কাজ করেছে। বাংলাদেশ ২০১৯ সালে পিফোরজি অংশীদার দেশ হিসেবে যোগদান করেন।
বিএস/এসএস