ডেস্ক রিপোর্ট:
ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের দায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ার পেছনেও দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন।
জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক এই প্রভাব আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবসংক্রান্ত এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে এক ওয়েবিনারে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল। ৪৫ বছরে এমন বৃষ্টি আর হয়নি। পরবর্তী মাসগুলোতেও অনেক বেশি বৃষ্টি ছিল। যার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছিল। তখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যায়।
ওই বছর সারাদেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল, তার অর্ধেকই হয়েছিল ঢাকায়। আর ঢাকায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার ছিল সারাদেশের ৭৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে বাংলাদেশে প্রকৃতিতে যে ঋতু বৈচিত্র্য তা লোপ পাচ্ছে। আর্দ্রতা কমে আসার পাশাপাশি তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ছে। এতে শহর এলাকায় ডেঙ্গুর মতো বাহক নির্ভর রোগের প্রকোপ বাড়ছে।
ভবিষ্যতে রাজধানী শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গবেষণার অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গণ তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এই কারণেই ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে ঋতুভেদে আবহাওয়ার বৈচিত্র্য। তাই যখন শীত থাকার কথা তখন তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকছে। আবার আগের তুলনায় এখন গ্রীষ্মকালের সময় বাড়ছে। তাতে বাড়ছে গরমও। এমনিভাবে দীর্ঘ হচ্ছে বর্ষাকাল। তাতে রোগ-বালাই বেশি হচ্ছে। আর এইসবই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হচ্ছে।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ মানুষ বিষণ্নতায় আক্রান্ত। আর ৬ শতাংশের মধ্যে উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে। এ বিষণ্নতা ও উদ্বেগের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের সম্পর্ক রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা। নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এ গবেষণা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিবেশবিদ সেলিমুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যেসব গবেষণা হয়, তাতে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর গবেষকদের ভূমিকা কম। এ ধারায় পরিবর্তন আনতে হবে।
বিএসডি / আইকে