নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২৫ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে। জাতীয় দক্ষতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বাছাইয়ে ৯টি স্কিলে ১১ জন বিজয়ীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে অনুষ্ঠানে।
গতকাল (মঙ্গলবার) ঢাকার বিনিয়োগ ভবনে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) কর্তৃক এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা শেষে বিজয়ীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। ইউনেস্কো-ইউনিভোক কর্তৃক এই দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল দক্ষতার মাধ্যমে যুবদের ক্ষমতায়ন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল স্কিলস পোর্টালে ‘লাইভ জব অপরচুনিটি’ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে দিবসের প্রতিপাদ্যের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোসাদ্দেক খান। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহুরুল হক এবং ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুর রহমান প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রধান উপদেষ্টা তরুণদের শুধু চাকুরি নয়, বরং উদ্যোক্তা মানসিকতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যত। আমাদের জনসংখ্যার বড় অংশ এখন তরুণ। এটা কোনো জাতির জীবনে বিরল ঘটনা, খুব কম জাতির জীবনেই এটা হয়েছে। আমাদের জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সূবর্ণ সময় এখন।
যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম বলেন, দক্ষতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে সমন্বয় করে একটি সমন্বিত স্কিলস ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
মানুষের যাপিত জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাবের বিষয় উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও এনএসডিএ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান রেহানা পারভীন বলেন, আমাদের শেখার পদ্ধতি, কাজের ধারাসহ সকল ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন আসছে। চ্যালেঞ্জের জায়গাটা হলো এ পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য সকলকে সমানভাবে প্রস্তুত করে তোলা।
তিনি বলেন, বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসে ইউনেস্কো-ইউনিভোকের তথ্য মতে-২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৮৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে এআই ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। অথচ বিশ্বের ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনও এআইভিত্তিক কাজের জন্য প্রস্তুত নয়। স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে ৯০ শতাংশ কিশোর কিশোরী ইন্টারনেট সংযোগের বাইরে আছে। এআই-এর প্রভাব সর্বব্যাপী হলেও এ বিষয়ে সকলের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— এনএসডিএ-এর সদস্য (সমন্বয় ও অ্যাসেসমেন্ট) ও যুগ্মসচিব মো. আব্দুস সামাদ, যুগ্মসচিব মিনা মাসুদ উজজামান প্রমুখ।