সিরি আ টেবিলে শীর্ষ তিন দলের হাতে আছে চারটি করে ম্যাচ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে ইন্টার মিলান। অঙ্কের হিসাবই বলছে আতালান্তা ও জুভেন্টাসের জন্য বাকি চার ম্যাচ স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা। জুভেন্টাসের টানা নয় মৌসুমের রাজত্বে ছেদ টেনে ইন্টার এবার সিরি আ চ্যাম্পিয়ন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও ঠেকাতে পারলেন না ‘তুরিনের বুড়ি’দের দাপটের পথ।
কাল রাতে অবশ্য জুভেন্টাসকে বাঁচিয়েছেন রোনালদো। উদিনেসের বিপক্ষে ৮২ মিনিট পর্যন্তও ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল জুভেন্টাস। ৮৩ থেকে ৮৯—এই ৭ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করে জুভেন্টাসকে ২-১ ব্যবধানের জয় পাইয়ে দেন পর্তুগিজ তারকা। ৩৪ ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে জুভেন্টাস তিনে উঠে এলেও শিরোপার আশা করে তো আর লাভ নেই।
ম্যাচের ১০ মিনিটে দ্রুত নেওয়া এক ফ্রি–কিক থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে গোল করেন উদিনেসে উইংব্যাক নাহুয়েল মলিনা। এ গোল শোধ করতে ৮৩ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় জুভেন্টাসকে। রোনালদোর নেওয়া ফ্রি কিকে ‘হ্যান্ডবল’-এর অপরাধ করেন উদিনেসে উইঙ্গার রদ্রিগো ডি পল। টানা তিন ম্যাচে গোলশূন্য থাকার খরা পেনাল্টি থেকে গোল করে কাটান রোনালদো। এরপর ৮৯ মিনিটে হেডে গোল করে জুভেন্টাসের জয় নিশ্চিত করেন পর্তুগিজ তারকা। ২৭ গোল করা রোনালদো লিগে এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা।
কিন্তু সর্বোচ্চ গোল করেও ক্লাবকে ঘরোয়া সেরা টুর্নামেন্টের শিরোপা এনে দিতে পারলেন না রোনালদো। অথচ এই রোনালদো আসার আগে টানা সাতবার লিগ জিতে ইতালির শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল জুভেন্টাস। চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে রোনালদোকে ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে উড়িয়ে আনে ইতালিয়ান ক্লাবটি। এরপর তারা আরও দুবার লিগ জিতলেও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারেনি। আর এবার তো ২০১১ সালের পর প্রথমবারের মতো হারাতে হলো লিগ শিরোপাও।
এ মৌসুমে সিরি আ-তে জুভেন্টাসের পারফরম্যান্স দেখে সেভাবে মনে হয়নি তারা লিগ জয়ের যোগ্য দাবিদার। লিগ টেবিলে কিছু সময় নেতৃত্ব দিয়েছে এসি মিলান। তারপর নেতৃত্ব হাতবদল হয়ে উঠেছে সান সিরোর আরেক ক্লাব ইন্টারের হাতে। ইউরোপে সাফল্য পেলে না হয় মানা যেত। রোনালদো ইতালিয়ান ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার চ্যাম্পিয়নস লিগে জুভেন্টাস এমন সব দলের কাছে হেরেছে, যাদের বিপক্ষে জয়টাই প্রত্যাশিত।
রোনালদোকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে জুভেন্টাস তাদের প্রথম মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেছে আয়াক্সের কাছে। পরের মৌসুমে শেষ ষোলোয় লিঁও এবং এবার সেই শেষ ষোলোতেই পোর্তোর কাছে হেরে বাদ পড়েছে জুভেন্টাস। হ্যাঁ, রোনালদো একা সব করতে পারবেন না। কিন্তু সত্যটা হলো, পর্তুগিজ তারকা তুরিনে পা রাখার আগে তুলনামূলক বেশি ভালো দল ছিল জুভেন্টাস। তিন বছরের মধ্যে দুবার উঠেছে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে।
রোনালদো জুভেন্টাসে আসার পর ক্লাবটির ব্র্যান্ড মূল্য হয়তো বেড়েছে, আয়েও যোগ হয়েছে দখিনা হাওয়া, গোলও কম করেননি পর্তুগিজ তারকা। কিন্তু ৩৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড আসার পর জুভেন্টাস আর আগের মতো নেই—পারফরম্যান্স ক্রমেই নামছে।