নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লার ঘটনার জেরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাধারণ মুসল্লিরা।
মিছিলটি রাজধানীর পল্টন-বিজয়নগর হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। তখন মিছিলকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় পল্টন, কাকরাইল, বিজয় নগর ও ফকিরেরপুল এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে বায়তুল মোকাররম মসজিদের ঈমাম জুমার নামাজের সালাম শেষ করার সঙ্গে-সঙ্গেই সাধারণ মুসল্লিদের ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু হয়। শুরুতে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করলেও আস্তে-আস্তে রাস্তায় নেমে পড়েন।
এক পর্যায়ে মিছিলটি মালিবাগের দিকে এগোতে থাকে। তখন পুলিশ তাদের নাইটিঙ্গেল মোড়ে আটকে দেয়। সাধারণ মুসল্লিদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হলেও এতে হেফাজতে ইসলামসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অংশ নিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভ থেকে কোরআন অবমাননাকারীদের শাস্তির দাবির পাশাপাশি হেফাজতের সাবেক নেতা মাওলানা মামুনুল হকসহ সংগঠনটির নেতাদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। এছাড়া সরকার ‘নাস্তিকদের’ হেফাজত করছে এমন অভিযোগ তুলে স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। এই সময় বিক্ষোভকারীদের কেউ-কেউ উপস্থিত মিডিয়া কর্মীদের ওপর হামলা ও তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, সাধারণত বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে যেসব বিক্ষোভ হয়, সেইগুলোর নেতৃত্ব কোনো না কোনো সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দল দিয়ে থাকে। কিন্তু আজকের এই বিক্ষোভে প্রকাশ্যে কেউ নেতৃত্বে ছিল না। তাই মিছিলটি নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আ. আহাদ বলেন, পরিস্থিতির অবনতি যাতে না ঘটে এবং অন্য কোনো গোষ্ঠী যেন সাধারণ মুসল্লিদের বিক্ষোভ মিছিলকে ব্যবহার করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য পুলিশ শুরু থেকে শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। নাইটিঙ্গেল মোড়ে আসার পর বিক্ষোভকারীদের কেউ-কেউ পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। তখন পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ধাওয়া দেয় এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। বেলা আড়াইটার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং যান চলাচল শুরু হয়।
বিএসডি /আইপি