আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জুমার নামাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হরিয়ানায় অন্তত ৩০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মুসলিমদের বাধা দেওয়ায় তাদের আটক করা হয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই কট্টর ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্য।
মুসলিমদের নামাজে বাধা দেওয়ার এই ঘটনা দেশটিতে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় উত্তেজনার সর্বশেষ ঘটনা। নয়াদিল্লির উপকণ্ঠের শহর হরিয়ানার গুরুগাঁওয়ে খোলা জায়গায় মুসলিমদের জুমার নামাজ পড়া বন্ধ করতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে আসছে।
শুক্রবার জুমার নামাজের আগে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ কয়েকশ’ অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে। এনডিটিভি বলছে, পরে ঘটনাস্থল থেকে কমপক্ষে ৩০ জনকে আটক করা হয়।
গুরুগাঁওয়ের সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট অনিতা চৌধুরী এনডিটিভিকে বলেন, ‘এখানে সবকিছুই শান্তিপূর্ণ আছে। যারা এখানে নামাজে বাধা দিতে এসেছিল, আমরা তাদের আটক করেছি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের সাথে আলোচনার চেষ্টা করেছি। আলোচনায় কাজ না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, মুসলিমরা নির্ধারিত ৩৭টি এলাকায় নামাজ পড়েছেন এবং যারা নামাজ পড়বেন তাদের পুরোপুরি সুরক্ষা দেওয়া হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শুক্রবারের ওই ঘটনার সময় একদল মানুষ মাস্ক পরে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকেই নামাজ বন্ধ করো, বন্ধ করো স্লোগান দেন।
বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র গুরুগাঁওয়ে এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৮ সালেও ওই এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে মুসলিমদের শুক্রবারের জুমার নামাজ পড়া নিয়ে আপত্তি জানান হিন্দুরা। পরে জেলা কর্মকর্তারা হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে মধ্যস্থতা করে নামাজের জন্য ৩৫টি জায়গা নির্ধারণ করে দেন।
শুক্রবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের হাতে ‘গুরুগাঁও প্রশাসন, ঘুম ভেঙে জেগে ওঠো’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মণ্ডপ এবং মন্দিরে হামলার ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সংখ্যালঘু মুসলিমদের স্থাপনা ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় মুসলিমদের বাড়িঘর ও মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
বিএসডি/এসএসএ