নিজস্ব প্রতিবেদক
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ধলেশ্বর গ্রামে এক ঝড়ের রাতে জন্ম নেওয়া লাল রঙের ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছিল ‘তুফান’। সেই নামের সার্থকতা যেন প্রমাণ করছে আজ তিন বছর সাত মাস বয়সী এই বাহমা শাহী আল জাতের বিশাল ষাঁড়। ওজন প্রায় ১৭ মণ বা ৬৮০ কেজি। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এখন এলাকাজুড়ে তুফান হয়ে উঠেছে কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।
তুফানকে প্রতিদিন খাওয়ানো হয় দেশি ঘাস, খইল, ভুসি ও ছোলাজাতীয় প্রাকৃতিক খাদ্য। মালিক মইনুল হক জানান, ষাঁড়টিকে বড় করতে কোনো ধরনের স্টেরয়েড বা কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। পুরোপুরি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়েছে তুফানকে।
১৩ বছর আগে প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভী কিনে খামার শুরু করেন মইনুল। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন একটি আধুনিক খামার। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১২টি উন্নত জাতের গরু- ফ্রিজি, হোলস্টাইন, ফ্রিজিয়ান ও শাহী আল। সব মিলিয়ে তার খামারের
গরুর বাজারমূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
তুফান সম্পর্কে মইনুল বলেন, ‘ও আমার পরিশ্রম আর ভালোবাসার ফল। শুধু গরু নয়, পরিবারের সদস্য হিসেবেই দেখি ওকে।’ এবারের কোরবানির ঈদে তুফানের দাম হাঁকছেন তিনি ৬ লাখ টাকা। তবে দাম ছাড়াও তিনি খুঁজছেন এমন একজন ক্রেতা, যিনি তুফানের মূল্য অনুভব করতে পারবেন।
তুফানকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের লোকজন। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, কেউ আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিচ্ছেন শেয়ার। স্থানীয় ব্যাপারীরাও তুফানে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তবে এখনো বিক্রির সিদ্ধান্ত নেননি মইনুল।
কামারখন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম সরকার জানান, কামারখন্দ উপজেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৫৬ হাজার গরু, যেখানে স্থানীয় চাহিদা ১৫ হাজার। খামারিদের সহযোগিতায় চলছে উঠান বৈঠক, পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা।