লাইফস্টাইল ডেস্ক,
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা নেওয়া এখন খুব জরুরি। সরকার সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে টিকা সংগ্রহের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
কিন্তু প্রায় ১৮ কোটি মানুষের এই দেশে সবাইকে একসঙ্গে টিকা দেওয়া মোটেও সহজ কথা না। তাই দেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ টিকার আওতায় আসেনি। এ অবস্থায় টিকা না নেওয়া মানুষরা যেমন নিজে ঝুঁকিতে আছেন, তেমনি তারা অন্যদের জন্যেও ঝুঁকির কারণ। তাই টিকা না নেওয়া মানুষদের আশেপাশে থাকার সময় আপনাকে অবশ্যই সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।
টিকা না নেওয়া মানুষদের পাশে থাকলে কী করবেন?
যারা টিকা নেয়নি তারা সহজে করোনা সংক্রমিত হতে পারেন। আপনি হয়তো টিকা নিয়েছেন। কিন্তু আপনার পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনও টিকা পায়নি। তাদের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না। কিন্তু যেহেতু অফিসে যাচ্ছেন, কাজের ক্ষেত্রে বাইরে বের হচ্ছেন, তাই মূলত যারা বয়সে ছোট, যারা টিকার আওতায় আসেনি কম বয়সের কারণে অথবা টিকা না পাওয়ায়, তাদের কাছ থেকে যথাসম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা ভালো। যারা টিকা নেননি, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস তাদের জন্য বড় ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে। এতে করে তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, তেমনি অন্যদের দ্রুত সংক্রমিত করে পরিস্থিতি নাজুক করে তুলতে পারেন। সে কারণে অফিসে বা আশেপাশে যারা ভ্যাকসিন নেয়নি বলে জানবেন, তাদের কাছ থেকে সব সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। অবশ্য ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও কেউ কেউ সংক্রমিত হচ্ছেন। শোনা যায়, এ বিষয়টি এখনো গবেষণা পর্যায়ে আছে বলে মূলত টিকা নেওয়া নারী/পুরুষকে সংক্রমণের জন্য ঝুঁকি মনে করা হচ্ছে না।
কতোটা নিরাপদ আপনি?
কেউ টিকা নেওয়ার পর পুরোপুরি নিরাপদ থাকবেন তা ঠিক বলা যায় না। গবেষকদের মতে, যারা টিকা নেয়নি, তাদের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা কতটুকু সেখানে এখানে বিবেচ্য বিষয়। হয়তো টিকা না নেওয়া মানুষটি সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলেন প্রতিদিন। সেক্ষেত্রে তার মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম। কিন্তু ব্যাপারটা উল্টোও হতে পারে। টিকা না নেওয়া মানুষটি যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানেন, তাহলে সে লোক আপনার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারেন। তাদের মাধ্যমে কয়েকটি কারণে করোনা ছড়াতে পারে-
* কোন পরিবেশে আপনি টিকা না নেওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন, মেলামেশা করছেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। যদি বদ্ধ ঘরে আপনাদের আলোচনা হয়, তাহলে খোলা জায়গায় আলোচনার চেয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি থাকবে আপনার।
* টিকা না নেওয়া লোক যদি মাস্ক ব্যবহার না করেন, তাহলে তিনি আপনার জন্য বেশি ঝুঁকির কারণ হতে পারেন। এছাড়া ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে একটি মাস্কই যথেষ্ট নয় অনেক সময়। সেক্ষেত্রে টিকা না নেওয়া লোকটিকে ডাবল মাস্ক পরা জরুরি।
* সামাজিক দূরত্ব খুব জরুরি। টিকা না নেওয়া লোকটির কাছ থেকে আপনাকে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
আপনি কি ঝুঁকিতে আছেন?
অফিসের কোনো মিটিংয়ে হয়তো আপনাকে অচেনা কারো সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে নিশ্চিত হয়ে নিন তিনি টিকা নিয়েছেন কি না। তা নিশ্চিত হতে না পারলে বা ওই ব্যক্তি টিকা নেননি জানালে অফিস মিটিংটা ভার্চুয়ালি করাই ভালো। এতে করে আপনার সংক্রমণ ঝুঁকি কমবে। কম বয়সী বা শিশুদের সঙ্গে মেশার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মানে আপনাকে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।
আপনার যা করণীয়
আপনি যদি টিকা নিয়ে থাকেন এবং কোনো কারণে টিকা না নেওয়া লোকদের সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে দেখা করতেই হয় তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত আপনার। মনে রাখতে হবে-
* ডাবল মাস্ক পরে যান। এক্ষেত্রে একটি সার্জিকাল ও একটি কাপড়ের মাস্ক হলে ভালো হয়। আর অবশ্যই খেয়াল রাখুন যেন নাকে মুখে ভালোভাবে আটকে থাকে মাস্ক।
* সব সময় একটি স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখুন যাতে প্রয়োজন হলেই হাত পরিষ্কার করতে পারেন।
* সবার কাছ থেকেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
* যদি আপনার বা যার সঙ্গে মিটিং আছে তার ফ্লু বা করোনাভাইরাস উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে ঘরেই থাকুন, সরাসরি সাক্ষাৎ থেকে দূরে থাকুন।
বিএসডি/আইপি