চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে মজবুত। টেকসই সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ছে। আগামীতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় যাবে।
আজ (শনিবার) বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী এবং আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চীনের অবদান’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার লিমিটেড-সিবিএফসিএল এই ওয়েবিনারে আয়োজন করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ওয়েবিনারে অংশ নেন। ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন সিবিএফসিএলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান গুয়োপে ইলিন পিটার এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিবিএফসিএলের নির্বাহী পরিচালক ড. ফখরুল ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ ও চীনের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের বিনিয়োগ অনেক অবদান রেখেছে। আগামী দিনেও চীনের এই বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে এবং আরও বৃদ্ধি পাবে বলে বক্তারা প্রত্যাশা করেন।
ওয়েবিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম সারওয়ার মিলন।
ওয়েবিনারের বিশেষ অতিথি সাবেক মন্ত্রী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম সারওয়ার ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফর এবং তখন থেকেই দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। ওয়েবিনারের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বিশেষ সরকারি কাজে থাকায় ওয়েবিনারের সংযুক্ত না হতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সিবিএফসিএলের সমাজকল্যাণ বিষয়ক পরিচালক শরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ ও চীনের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে। পরে সঞ্চালনার দায়িত্ব নেন নির্বাহী পরিচালক ড. ফখরুল ইসলাম বাবু। ওয়েবিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল এইচ এমজি আজম। তিনি চীন-বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও সামাজিক সম্পর্কের ইতিহাসভিত্তিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
বিশেষ বক্তা লিগ্যাল ইকনমিস্ট এম এস সিদ্দিকির বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্ব বঙ্গবন্ধুর চীন সফর এবং স্বাধীনতাপরবর্তী পারস্পরিক সহযোগিতায় গড়ে ওঠা চীন-বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম সম্পর্কের কথা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মুস্তাফা মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেন। তার কথায় উঠে আসে কীভাবে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছে বাংলার স্বাধীনতা। কীভাবে চীন একটি আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
চীন ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ওয়েবিনারটি চীন-বাংলার একটি মিলনমেলায় পরিণত হয়। ওয়েবিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চাইনিজ এন্টারপ্রাইসেস অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ (সিঅ্যাব) প্রেসিডেন্ট কে ছাং লিয়াং, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. নাযমুজ-সাকিব, বিসিসার প্রেসিডেন্ট মারুফ হাসান, বাহকের সাধারণ সম্পাদক আশফাকুর রহমান পলাশ প্রমুখ। এ ছাড়া চীন দূতাবাস এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিকরা এতে অংশ নেন।
বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার লিমিটেড-সিবিএফসিএল। যার বিজয়ীদের নাম ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ঘোষণা করেন সিবিএফসিএলের সহকারী পরিচালক মইন উদ্দিন হেলালী।
বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন প্রোগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান এবং সিবিএফসিএলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামরুল হাসান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
বিএসডি/জেজে