প্রযুক্তি ডেস্ক,
হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টার্গেট করে গ্রামে পৌঁছানো হচ্ছে টেলিযোগাযোগে উচ্চগতির ৪জি সেবা। এর ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ সেবায় গতি আসবে। একই সঙ্গে সারাদেশে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ৫জি সেবা চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে গ্রামে ৪জি সম্প্রসারণ এবং দেশে ৫জি সেবা চালুর একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
সংশ্নিষ্টরা বলেছেন, ‘গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন’ নামে প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য ৪জি প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক টেলিযোগাযোগ সেবা সুলভ এবং সাশ্রয়ী হবে। একই সঙ্গে আগামী দুই বছরের মধ্যে সারাদেশে ৫জি প্রযুক্তিনির্ভর সেবা চালুর উদ্দেশ্যে বর্তমান ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সর্বাধুনিক করা হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ২০৪ কোটি টাকা। প্রায় পুরো অর্থই জোগান দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। মাত্র ৬০ কোটি টাকা দেবে টেলিটক। ২০২৩ সালের মধ্যে এর বাস্তবায়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। সুপারিশে বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে আধুনিক প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
৪জি প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়াসহ ৫জি প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল নেটওয়ার্কের প্রস্তুতি শুরু হবে। এতে বিদ্যমান ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক আধুনিক এবং শক্তিশালী হবে।
নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে ৫জির প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক কম বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে দ্রুতগতির মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ৩জি ও ৪জি প্রযুক্তিতে বেতার তরঙ্গ ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেসব দুর্বলতা রয়েছে, ৫জি তা থেকে মুক্ত থাকবে।
জানতে চাইলে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহাব উদ্দিন সমকালকে বলেন, গ্রামাঞ্চলসহ দেশের সব মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যের অংশ হিসেবেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ হবে। ফলে চিকিৎসা, শিক্ষায় টেলিক্লাস রুমের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা সবার জন্য সহজ এবং সাশ্রয়ী হবে। এমন অনেক ধরনের প্রযুক্তি সুবিধা পাবেন সারাদেশের সব নাগরিক।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে নতুন তিন হাজার বিটিএস সাইট তৈরি করা। এতে রুম, টাওয়ার, লক ইত্যাদি থাকছে। টেলিটকের নিজস্ব ৫০০ টাওয়ার এবং দুই হাজার ৫০০ টাওয়ার শেয়ারিং সাইট প্রস্তুত করা হবে। সেবা সক্ষমতা বাড়াতে ৩জি ও ৪জির বিদ্যমান দুই হাজার সাইটের যন্ত্রপাতির ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হবে। ফিক্সড ওয়্যারলেস এক্সেজ (এফডব্লিউএ) প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস-আদালতে ইন্টারনেট সেবা বাড়াতে পাঁচ হাজার এফডব্লিউএ ডিভাইস স্থাপন করা হবে। এমন বেশ কিছু কার্যক্রম রয়েছে প্রকল্পে।
বিএসডি/আইপি