নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই নোয়াখালীর সদরে ট্রাকচাপায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে সোনাপুর জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ২৩ বছর বয়সী অজয় মজুমদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের বাদল চন্দ্র মজুমদারের ছেলে। সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাজী সুলতান আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাহাদী হাসান লিমন নামে গ্রীন ইউনিভার্সিটির এক ছাত্র নিহত হন। লিমন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়তেন।
এর আগে ২৪ নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানে সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন নটর ডেম কলেজের এক ছাত্র। এ ঘটনার পর ৯ দফা দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাজী সুলতান আহসান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে মাইজদি থেকে সিএনজি অটোরিকশা করে মান্নান নগরের দিকে যাচ্ছিলেন অজয়। এ সময় সোনাপুর জিরো পয়েন্টে গাড়ি থেকে নামার সময় একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর ট্রাকের চালক পালিয়ে গেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছি।’
এ ঘটনার প্রতিবাদে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট সড়কে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম মইনুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের বড় ভাইকে হারিয়েছি। এর আগেও অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে প্রশাসন নজর দেয়নি। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ফারদ্বীন এহসান শাওন বলেন, ‘এই সড়ক অনিরাপদ কিন্তু কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া সড়ককে নিরাপদ করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করছি।’
এ বিষয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক দিদার-উল-আলম বলেন, ‘মেধাবী এ শিক্ষার্থীর অকাল প্রয়াণ কষ্ট ও বেদনার। তার পরিবারের সদস্যদের জন্য এ শোক সহ্য করা কঠিন।’
সড়কে শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির পেছনে যারা জড়িত তাদের বিচারের পাশাপাশি শিক্ষার্থী আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল বাসভাড়া অর্ধেক করা। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়েছে তারা। বুধবার থেকেই ঢাকা শহরে ছাত্রদের জন্য কার্যকর করা হবে হাফ পাস।
হাফ পাসের ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে মালিক সমিতি। এর মধ্যে রয়েছে হাফ পাস কার্যকর হবে শুধু রাজধানীতে, হাফ ভাড়া দেয়ার সময় অবশ্যই ছবিসংবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দেখাতে হবে। হাফ পাস কার্যকর সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে কোনো হাফ পাস থাকবে না।
বিএসডি/ এলএল